ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলে তার অবদান আজও অনস্বীকার্য। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০১১-য় ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য তিনি। দুটি টুর্নামেন্টের ফাইনালেই সর্বোচ্চ স্কোরার হিসেবে তার নামই উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতীয় দলের মূল স্তম্ভ হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। একপ্রকার ঘাড় ধাক্কা দিয়েই তাকে বের করে দেওয়া হয়েছিল দল থেকে।
আর লাইমলাইট ছিনিয়ে নিয়েছিলেন উত্তরসূরিরা। চলতি আইপিএলেও যখন তাকে নিয়ে টালবাহানা চলছে, ঠিক তখনই ভারতীয় নির্বাচন কমিটির প্রাক্তন প্রধান সন্দীপ পাটিল ফাঁস করলেন কেন টিম ইন্ডিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল গৌতম গম্ভীরকে।
এককালে দলে মহেন্দ্র সিং ধোনির পরেই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের জায়গা পাকা ছিল গম্ভীরের। ক্যাপ্টেন কুলের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন দিল্লির ব্যাটসম্যান। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোথায় যেন একটা ফাঁক থেকে গেল। নিজেকে শচিন, সৌরভ, লক্ষ্মণ, শেহবাগদের সঙ্গে একসারিতে বসাতে পারলেন না গম্ভীর। দুর্দান্ত সব রেকর্ড ঝুলিতে থাকলেও কিংবদন্তি হয়ে ওঠা হলো না তার। ২০১১ সালের পরই ছবিটা পালটে গিয়েছিল। কিন্তু কেন এমনটা হলো? কেন তার থেকে একলাফে অনেকখানি এগিয়ে গেলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা?
উত্তর দিলেন প্রাক্তন নির্বাচক প্রধান সন্দীপ পাটিল। একটি ইংরাজি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “টিম ইন্ডিয়া থেকে গম্ভীরের বাদ পড়ার মূল কারণ ওর বাড়তে থাকা ঔদ্ধত্য। গম্ভীরের মধ্যে একটা ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’ ভাব ছিল। যার জন্য ওর নাম দিয়েছিলাম অমিতাভ বচ্চন।” অর্থাৎ গম্ভীরের গাম্ভীর্যই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
আইপিএলে লাগাতার হারের দায় কাঁধে নিয়ে সদ্য দিল্লি দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন গম্ভীর। তারপর কেকেআরের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশেও ছিলেন না। এই ঘটনার ঠিক দু’দিন পর গম্ভীরকে নিয়ে এ তথ্য ফাঁস করলেন সন্দীপ পাটিল। তিনি জানান, ২০১১ সালে ইংল্যান্ড সফরে একজন বাউন্সার মেরেছিল গম্ভীরকে। তখনই দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন ভারতীয় ক্রিকেটার। যদিও স্ক্যান রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল, গম্ভীরের চোট তেমন গুরুতর নয়।
সেই সিরিজে খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন তিনি। কিন্তু গম্ভীর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রধান নির্বাচক হিসেবে সন্দীপ তাকে দল থেকে বাদ দিলে সন্দীপের সঙ্গে দীর্ঘ ৭-৮ বছরের বন্ধুত্বও নাকি চুকিয়ে দিয়েছিলেন গম্ভীর। এরপর শিখর ধাওয়ানের উত্থানের কারণে গম্ভীরের দলে প্রত্যাবর্তন একপ্রকার অসম্ভব হয়ে যায়।
সন্দীপ বলছেন, “গোতি হয়তো এখনো আমার উপর রেগে আছে। কিন্তু আমার কাছে এখনো ওই প্রিয় ক্রিকেটার।”