গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের প্রধান দুই শরীক বিএনপি ও জামায়াত উভয় দলের মেয়র প্রার্থী ময়দানে থাকায় কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগ প্রার্থী।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে জামায়াতের ভোট একটি বড় ফ্যাক্টর। ২০০৯ সালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান এলাকা নিয়ে গঠিত গাজীপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন আলী প্রায় ২৫ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে বর্তমানে আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন বিএনপির প্রার্থী সুরুজ আহম্মেদ। পক্ষান্তরে চেয়ারম্যান পদে জামায়াতের কোনো প্রার্থী না থাকায় বিএনপি প্রার্থী এস এম শাহানশাহ আলম আওয়ামী প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়লাভ করেছিলেন।
নয় বছরের ব্যবধানে এই সিটিতে জামায়াতের ভোটের সংখ্যা অনেক বেড়েছে বলেই সুধীজনদের ধারনা। সাংগঠনিকভাবেও জামায়াত নয় বছর আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি সুসংগঠিত ও শক্তিশালী। ইতিমধ্যে তাদের মেয়র প্রার্থী নগর আমীর অধ্যক্ষ এস এম সানাউল্লাহর পক্ষে পরিকল্পিতভাবে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে তারা নগরবাসীর দৃষ্টি কাড়তে সমর্থ হয়েছে।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকা বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ থেকে জীবন-জীবিকা নির্বাহ ও বিভিন্ন কারণে গাজীপুরে আসা ভাসমান ভোটারের সংখ্যাও এখন প্রচুর। এদের বড় একটি অংশ জামায়াতের নীরব সমর্থক।এদিকে গাজীপুর মহানগরে বসবাসরত নগরবাসীর বৃহৎ একটি অংশ জেলার কাপাসিয়া উপজেলা থেকে আগত। জামায়াত প্রার্থী অধ্যক্ষ এস এম সানাউল্লাহর জন্ম কাপাসিয়ায় হওয়ায় তিনি এর একটি বাড়তি সুবিধা অবশ্যই পাবেন।
মাদরাসার অধ্যক্ষ এবং কেন্দ্রিয় শিক্ষক নেতা হওয়ার কারণে সাধারণ শিক্ষক সমাজ ও মাদরাসা শিক্ষকদের মাঝেও অধ্যক্ষ সানাউল্লাহর ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
গাজীপুরের বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে মহানগর জামায়াতের সাহসী ও জোরালো ভুমিকা এবং সারাদেশে জামায়াতের উপর বর্তমান সরকারের অব্যাহত জুলুম-নির্যাতনের কারণেও সার্বিকভাবে জামায়াতের প্রতি গণমানুষের সহানুভূতি ও সমর্থন অনেকটাই বেড়েছে। সর্বোপরি দলের নিবন্ধন কেড়ে নেয়ার ফলে জামায়াত প্রার্থীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে হচ্ছে এ কারণেও ভোটারদের বাড়তি সহানুভূতি পাচ্ছেন তিনি। শিক্ষা, সততা, কর্মক্ষমতা, দক্ষতা ও যোগ্যতার বিচারেও ক্লিন ইমেজের জামায়াত প্রার্থী অনেকটাই এগিয়ে।
সব মিলিয়ে ২০ দলীয় জোট থেকে একক প্রার্থী দিতে না পারলে বিজয় লাভ করা দুরূহ হবে বলেই সাধারণ ভোটারদের ধারনা। পক্ষান্তরে অধ্যক্ষ এস এম সানাউল্লাহকে ২০ দলের একক প্রার্থী করা হলে বিজয় নিশ্চিত বলেই মনে করেন নগরবাসী।