বিরোধীদলীয় জোট রাজনীতির ‘ বল ‘ টা বিএনপির কোর্টে ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে-সিরাজুল ইসলাম শাহীন।

আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান ঢাকা মহানগরীর শুরা সদস্যদের সাথে বৈঠকে ২০দলীয় জোট রাজনীতির সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন সম্প্রতি। তাঁর এ ব্ক্তব্যের একটি ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য এবং শরিক দলগুলোর শীর্ষনেতা সহ অনেকেই মিডিয়ায় এ বিষয়ে কথা বলেছেন। কেউ একটি শব্দের সাথেও দ্বিমত বা প্রতিবাদ করেন নি। কিন্তু যথারীতি মিডিয়ায় টুইস্ট করা একটি শিরোনাম ফলাও করা হয়েছে, ” জামায়াত ২০দলীয় জোট ছেড়েছে ”। যদিও তিনি বা তাঁর দল এমন কথা কখনো বলেননি। এই বাক্যটি প্রথম বয়ান করেছেন পরেরদিন আওয়ামীলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান। মজার বিষয় হচ্ছে লীগ নেতার কথাটি আমীরে জামায়াতের নামে চালিয়ে দেয়া হল। আর যায় কই। তোলপাড় সর্বত্র – একেবারে টক অব দা কান্ট্রি।

নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠকে রাজনৈতিক সর্বশেষ পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এতে দায়িত্বশীলদের মাধ্যমে জনশক্তি ও জনগনের কাছে জামায়াতের অবস্থান পরিষ্কার করা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে সময়োপযুগি এবং যথার্থ। নেতৃত্বের এমন দক্ষতা মুক্তিকামী জনতার কাম্য বটে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াই নিয়ে যারা চিন্তা করেন – বিরোধী দলীয় ক্রমাগত ব্যর্থতা যাদের উদ্ভিগ্ন করে তুলে – তারা এমন স্পষ্ট ও সাহসী উচ্চারনে উৎসাহিত হয়েছেন। তবে টুইস্ট করা শিরোনাম দেখে অনেকে তালগুল পাকিয়ে ফেলছেন। ন্যূনতম যাচাই বাছাই না করে তড়িঘড়ি জামায়াত কে একহাত নিয়ে নিচ্ছেন। সুপ্রিয় পিনাকী ভট্রাচার্য্য সহ সংশ্লিষ্টদের আমীরে জামায়াতের ঐ বক্তব্যের মূল লিংকটি অন্তত দুইবার মনযোগ দিয়ে শোনা দরকার।

দলের সেক্রেটারিয়েট পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মিডিয়ায় কথা বলার সময় আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। আমীরে জামায়াতের কোন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠলে জবাব বলিষ্ঠ হতে হবে। দরকার হলে সময় নেয়া যায় কিন্তু যা তা বলা যায় না। ভুল হতে পারে। এমন হয়ে গেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশোধনী তথা ব্যাখ্যা আসতে হবে।

মনে রাখতে হবে আমীরে জামায়াত এবং সেক্রেটারী জেনারেলের কোন ফোরামে দেয়া বক্তব্য ব্যক্তিগত হয় না। বক্তব্যটি নিয়ে আওয়ামী ঘরানা এবং জামায়াত বিদ্বেষী মহলের আর্তচিৎকারে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সেই ঐতিহাসিক উক্তিটি প্রনিধানযোগ্য । তিনি বলছিলেন ,” আনন্দ বাজার যখন আমার সমালোচনা করে তখন আমি মনে করি ভাল কিছু করেছি আর যখন আমার প্রশংসা করে তখন ধরে নেই মুসলমানদের কোন ক্ষতি বোধহয় করে ফেলেছি। ”।

পরিশেষে বলা যায় বিরোধী দলীয় জোট রাজনীতির ‘ বল ‘ টা বিএনপির কোর্টেই ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে। কি চান , কিভাবে চান তা নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না , ” সময় এবং নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না ”। লেখকঃ সিরাজুল ইসলাম শাহীন সাবেক সিলেট মহানগর জামায়াত সেক্রেটারি, sirajulislamshaheen@yahoo.com; 01/09/2022; London