২ মন্ত্রী এবং ২০ কমিটি-নানা রকম সংকটে জর্জরিত আওয়ামী লীগ শু-দ্ধি অভিযান শুরু করেছে। চলতি মাসের শেষের দিকে আওয়ামী লীগের কার্যনিবাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বৈঠকে বিভিন্ন করণে দলের শৃ-ঙ্খলা পরিপন্থী ক-র্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ১৮ জন এমপির ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে।




দুইজন মন্ত্রী দলের স্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ড করেছেন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদ দিয়েছেন এমন অভিযোগে অভিযুক্ত তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এছাড়া ২০টি জেলা কমিটি বাতিল করা হবে কি হবে না সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।




উল্লেখ্য যে, গত কিছুদিন ধরেই আওয়ামী লীগের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী এবং বিএনপি-জামাত থেকে আসা চরদের নিয়ে কথাবর্তা হচ্ছিল। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই বছর আগেই আওয়ামী লীগের ভেতরে যারা অ-নুপ্রবেশকারী তা-দেরকে চি-হ্নিত করে একটি তালিকা দিয়েছিলেন সাংগঠনিক স-ম্পাদকদেরকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।




কিন্তু সেই তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি। এবার পৌরসভা নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, যারা দলের শৃ-ঙ্খলার বি-রোধী কাজ করবে, নৌকার বি-রুদ্ধে প্রার্থী হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুধু তাদের বি-রুদ্ধেই নয়, তাদেরকে যারা ম-দদ দেবেন তাদেরও ভবিষ্যতে নৌকা প্রতীক দেয়া হবে না।




কিন্তু এই নি-ষেধাজ্ঞার সত্ত্বেও আওয়ামী লীগে এবার বিদ্রোহী প্রার্থীর মহামারী দেখা দেয়। প্রায় সব স্থানেই বিদ্রোহী প্রার্থীরা প্র-তিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কমিটি অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, এসব বিদ্রােহী প্রার্থীদের পেছনে স্থানীয় এমপি এবং মন্ত্রীদের মদদ ছিলো।




পৌরসভা নির্বাচনের সাথে সাথেই আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দল এই নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলো, তারা কিভাবে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিল এবং কে তাদেরকে মদদ দিয়েছে সে ব্যাপারে অ-নুসন্ধান চালায় এবং এ সম্পর্কিত একটি রি-পোর্ট ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে হ-স্তান্তর করা হয়েছে।




ওই রিপোর্টে ১৮ জন এমপির নাম রয়েছে যারা পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বি-রুদ্ধাচারণ করে বি-দ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন। এই ১৮ এমপির মধ্যে আবার আছেন দুইজন মন্ত্রী। এই দুইজন মন্ত্রী দলের নি-ষেধাজ্ঞা অমান্য করে বি-দ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন এবং বিদ্রোহী প্রার্থীকে জে-তানোর জন্য প্রশাসনের সহায়তাও নিয়েছেন।




আওয়ামী লীগের এক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, এই ১৮ এমপি এবং ২ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে সেটি চূড়ান্ত করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সি-দ্ধান্ত নিয়েছে যে, চলতি মাসেই আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে।




তবে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, এখনই যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হলেও ভবিষ্যতে তারা যে নৌকা প্রতীক পাবেন না এটা মোটামুটি নিশ্চিত। এছাড়াও স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে যে, অন্তত ২০টি জেলা কমিটি দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছে।




জেলা কমিটির পছন্দের প্রার্থী মনোনয়ন না হওয়ায় তারা এ কাজ করেছে। এই কিমিটিগুলোর ব্যাপারেও হয়ত খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। একটি সূত্র বলছে যে, যে সমস্ত কমিটিগুলো দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেনি তাদের কমিটি তাৎক্ষণিকভাবেই বাতিল করে দিয়ে নতুন কমিটি করা হবে।




ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের শুদ্ধি অভিযানে অন্তত ৩টি জেলায় কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই ধারায় এ ২০টি জেলাতেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে। তবে শুধুমাত্র স্থানীয় সরকার নির্বাচনই যে আওয়ামী লীগকে কঠোর অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে তা না।




আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের ভেতরে কিছু অনুপ্রবেশকারী অস্থিরতার সৃষ্টি করছে এবং প্রকাশ্য বিরোধের মাধ্যমে দলকে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে দাঁড় করাচ্ছে। আর এ কারণেই এখনই এখনই যদি ব্যবস্থা না নয়ে হয় তাহলে ভবিষ্যতে এটি দলের জন্য আরো ক্ষতিকর হবে। আর বিবেচনা থেকেই আওয়ামী লীগ দলের যারা অনুপ্রবেশকারী, বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদদাতা এবং দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।banglainsider