টাকা-পয়সা কিংবা সৌন্দর্য বিবাহিত জীবনকে সুখী করতে পারে না। ভালোবাসা ছাড়া কেউ দাম্পত্য জীবন সুখী হতে পারে না। দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আন্তরিকতা। বিনীত, নমনীয়, বিশ্বাসযোগ্য, ভালো স্বভাব, সহযোগী মনোভাবাপন্ন, ক্ষমাশীল, উদার ও ধৈর্যশীল গুণগুলো সংসার টিকিয়ে রাখতে সাহয্যে করে।
আসুন জেনে নেই দাম্পত্য জীবনে সুখে থাকার উপায়-
মনের মিল
দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মনের মিল। মনের মিল না থাকলে সংসার জীবনে সুখী হওয়া যায় না। আর সবসময় মনের মিল না-ও হতে পারে। তাই বলে অন্য কারও তুলনা টেনে আনবেন না। এতে হীনম্মন্যতায় ভুগতে পারেন সঙ্গী।
জোর করবেন না
আপনার স্ত্রীকে শারীরিক ঘনিষ্ঠতায় জোর করবেন না বা কোনও কিছু চাপিয়ে দেবেন না। অনেকেই মুখ ফুটে নিজের চাহিদার কথা বলতে পারেন না। ঠাণ্ডা মাথায় কথা বলুন। বুঝে নিন ঠিক কী চান তিনি।
সঙ্গীর পছন্দকেও গুরুত্ব দিন
স্বামী বা স্ত্রী দুজন দুজনের পছন্দের গুরুত্ব দিন। ভালোবাসা যেন শরীরসর্বস্ব না হয়। বরং মন জয় করুন।
বিশেষ দিনে উপহার
বিশেষ দিন যেমন, বিবাহবার্ষিকী, জন্মদিন। এই দিন গুলোতে বিশেষ আয়োজন রাখতে পারেন। এছাড়া উভয়ে নিজেদের উপাহার দিতে পারেন। এত সংসার হবে আনন্দময়।
ভুল বুঝাবুঝি
সংসার জীবনে ভুল বুঝাবুঝি, ঝগড়া হতে পারে। নিজেদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা করুন। আর মনের মধ্যে কষ্ট চেপে রাখবেন না। এতে সঙ্গীর প্রতি বিশ্বাস কমে যায়।
হঠাৎ পরিবর্তন
জোর করে কিছু পাল্টে ফেলার চেষ্টা করবেন না। আরোপিত কোনও কিছুই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এতে করে সংসারের শান্তি নষ্ট হয়। তাই সবকিছুর মধ্যে সংযত ভাব আনুন।
সপ্তাহে একদিন ঘুরতে যান
দাম্পত্য জীবনে সুখে থাকার অন্য আরেকটি উপায় হচ্ছে ঘুরে বেড়ানো। কারণ সারা সপ্তাহ কাজ করে মন ও শরীর ঠিক রাখতে এবং রোমাঞ্চ করেত সঙ্গীর সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে পারেন।
মানুষের মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে অণুজীব!
আমরা মানুষ হয়েছি আমাদের মন, আমাদের চিন্তা করার শক্তি আর আবেগের জন্যেই।
কিন্তু ইদানীং একটি নতুন ও আলোচিত ধারণা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে; যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে, মানুষের শরীরের অভ্যন্তরে যেসব ব্যাকটেরিয়া বা অণুজীবের বাস, বিশেষ করে অন্ত্রে-মস্তিষ্ককে পরিচালনায়, সেসবের এক ধরনের অদৃশ্য হাত রয়েছে।
বিজ্ঞান এখনও জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যে, কীভাবে আমাদের ভেতরে এতসব কোটি কোটি অণুজীব বাস করছে এবং সেই সঙ্গে কীভাবে তারা শারীরিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।
তবে হতাশা, অটিজম ও মস্তিষ্কের কোষ নিউরনকে বিকল করে দেয় এমন সব রোগের জন্য এ ধরনের জীবাণুর যোগসূত্র কিন্তু মেলে। গবেষকরা মনে করেন যে, তারা এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে জেনেছেন যেগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
এগুলোকে তারা বলেন, মুড মাইক্রোবস বা সাইকোবায়োটিকস।
জাপানের কিয়ুশু বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালানো হয়। যে ইঁদুরগুলো কখনই কোনো ধরনের জীবাণুর সংস্পর্শে আসেনি।
যখন তারা কোনো সমস্যায় পড়ে, তখন সেগুলো সাধারণ ইঁদুরের চেয়ে বেশি পরিমাণ স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ করে।
এটিকে চিন্তার ক্ষেত্রে অণুজীবের অস্তিত্ব বা প্রভাবের বড় একটি ইঙ্গিত বলে ধরে নেয়া হয়।
কীভাবে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া আমাদের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে?
বলা হয় যে একটি উপায় হলো- আমাদের ভেগাস স্নায়ু, যা তথ্য বহনকারী একটি সুপার হাইওয়ের মতো কাজ করে; যোগসূত্র ঘটায় অন্ত্রের সঙ্গে মস্তিষ্কের।
ব্যাকটেরিয়া হজমের সময়ে আঁশজাতীয় খাদ্যকে ভেঙে তার এক ধরনের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায়। সেটি থেকে শর্ট চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড উৎপাদিত হয়, যা কিনা শরীরের চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।
অভ্যন্তরে বাস করা সব ধরনের অণুজীবকে বলা হয়ে থাকে মাইক্রোবায়োম। গবেষকরা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের সঙ্গে পারকিনসন্স রোগীর মস্তিষ্কের এক ধরনের যোগসূত্র দেখেছেন।
যদিও পারকিনসন্স স্পষ্টভাবেই এক ধরনের স্নায়বিক বৈকল্য। যার কারণে মস্তিষ্কের কোষগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পেশিগুলোর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
কিন্তু ক্যালটেকের মেডিকেল মাইক্রোবায়োলজিস্ট প্রফেসর সার্কিস ম্যাজমানিয়ান দেখিয়েছেন যে, এখানে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াও একভাবে জড়িত।
তিনি তার গবেষণায় পারকিনসন্স রোগী এবং সুস্থ ব্যক্তির মাঝে মাইক্রোবায়োমের খুব সুনির্দিষ্ট পার্থক্য পেয়েছেন।
আর এ ধরনের গবেষণাই ইঙ্গিত দিচ্ছে, অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া কিংবা মাইক্রোবায়োমের পরিবর্তন ঘটিয়ে স্নায়বিক বা মস্তিষ্কের রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ড. ক্রিস্টিন টিলিশ মনে করেন, এ সম্ভাবনা নিয়ে আরও অনেক বেশি গবেষণার প্রয়োজন।
যাতে করে অণুজীবের নিয়ন্ত্রণ ঘটিয়ে সত্যিই মানসিক স্বাস্থ্যেরও এক ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যায়।
শীর্ষনিউজ