এবার পুলিশের হাতে বেদম পিটুনি খেলেন সেনাবাহিনীর মেজর !

গত ১ মে ঢাকা বগুড়া হাই ওয়েতে ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম দেখা দিয়েছিল। এলেঙ্গা থানা এলাকায় দুই ট্রাফিক পুলিশ উল্টো দিক থেকে কিছু গাড়িকে প্রবেশ করতে দেয়। এটা নিয়ে সেনাবাহিনীর ১৯তম ডিভিশনের মেজর মুনিরের সাথে সেই দুই পুলিশের বচসা শুরু হয়। তখন মেজর মুনিরকে প্রহার করে সেই দুই পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায় এবং সেখানে নির্মমভাবে পেটানো হয়।

খবর পেয়ে মিলিটারি পুলিশের কম্যান্ডিং অফিসার তাৎক্ষণিক সেই স্পটে চলে যান এবং ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত দুই পুলিশকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে আসার জন্যে একটি আর্মি ভিহাইকেলে উঠান। তখন ১৫ জন পুলিশ সদস্য মিলিটারি পুলিশদেরকে এই কাজে বাঁধা দেন। তখন আরো ১৪ জন মিলিটারী পুলিশ এবং ৩ জন কাউন্টার টেররিজম সদস্য অস্ত্র শস্ত্র সহ ঘটনাস্থলে পৌছেন।

এদিকে আইজিপি নবম ডিভিশনের জিওসির কাছে টেলিফোন করেন এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দেন। এর পরে দুজন পুলিশকে রেখে মেজর মুনিরকে নিয়ে ফেরত আসেন। আইজিপির নির্দেশে ঢাকা ডিভিশনের ডিআইজিও ঘন্টা খানেকের মধ্যে ঘটনা স্থলে পৌছান। ঘটনাস্থলে পৌছে ডিআইজি সেনা অফিসারদের ঐ জায়গা ছেডে যেতে অনুরোধ জানান।

আজ ঢাকার ডিআইজি কয়েকবার সাভারের জিওসির সাথে দেখা করার জন্যে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তাকে সময় দেয়া হয় নি। বরং এমপি অফিস ২ এর সাথে বসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনীর ভেতরে চরম হতাশা বিরাজ করছে।এ দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতি একটি দল বা গোষ্ঠী প্রথম থেকেই বৈরিতা দেখিয়ে আসছে।

১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় তারা প্রভুর কাছে দাসখত দিয়ে আসে এই দেশটিতে কোনো প্রতিরক্ষা বাহিনী না রাখার নিমিত্তে। সেই প্রতিজ্ঞামত তারা রক্ষী বাহিনী প্রতিষ্ঠা করে। রক্ষীবাহিনীর সেই ইতিহাস সবার জানা।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেও তাদের সেই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। তখন ক্যাপ্টেন গাফফারের মত অনেকেই পুলিশ কর্তৃক নিগৃহীত হয়েছিলেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর সার্বিক শৃঙ্খলা, স্পিরিট এবং একতার কাছে ষড়যন্ত্রকারীরা খুব বেশি সফল হতে পারে নি। কিন্তু এক এগারো নামক মহা ষড়যন্ত্র নতুন সুযোগ এনে দেয়। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মেরুদন্ড ভেঙে ফেলা হয়েছে। তারপর ধাপে ধাপে সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন অজুহাতে দুর্বল করা হয়েছে।

সেনা বাহিনীর প্রত্যেকটি সদস্য এবং তাদের পরিবারবর্গকে চরম আতংকের মধ্যে রাখা হয়েছে। দেশের সাধারণ জনগণ জানেন একটি বিশেষ মহলের ছত্রছায়ায় সেনাবাহিনীর এই চরম ক্ষতি কারা করে যাচ্ছে! একজন সাধারণ জনগণ কষ্ট বা আঘাত পেলে উহ আহ শব্দ করতে পারবে কিন্তু সেই সুযোগটি তাদের নেই। এঁরা গোপন মাইর হজম করবে কিন্তু কেউ সেই কথাটি বলতে পারবে না।

তথাকথিত জঙ্গীবাদের দোহাই দিয়ে মেজর জিয়ার মত অনেক চৌকশ অফিসারকে গায়েব করা হয়েছে। এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে। মেজর মুনির সর্বশেষ শিকার। এসবের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা বাহিনীর নার্ভ পরীক্ষা করা হচ্ছে।

সেনাবাহিনীকে ধাপে ধাপে বর্তমান পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আজ পুলিশের সাধারণ সেপাই বা নিম্নপদস্থ একজন অফিসার সেনাবাহিনীর মেজর পর্যায়ের অফিসারকে বেধড়ক পেটাতে পারে। হায়রে সেনা বাহিনী, হায়রে দেশ! অথচ সেনাবাহিনীর বীর সৈনিক ও অফিসাররাই এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল। সেই সেনাবাহিনীর মর্যাদা আজ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে?!

tazakhobor24.live/archives/40240