বিসিবিতে এসেছিলেন রিচার্ড হ্যালসল। পদত্যাগ করার প্রায় দেড় মাস পর কাল আবার বিসিবিতে বাংলাদেশ দলের সাবেক সহকারী কোচ। পদত্যাগ সম্পর্কে দিয়েছেন নিজের ব্যাখ্যা।
নিদাহাস ট্রফির আগে অন্তর্বর্তী প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়া হলো কোর্টনি ওয়ালশকে। অথচ দায়িত্বটি পাওয়ার কথা ছিল সহকারী কোচ রিচার্ড হ্যালসলের। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ হিসেবে যোগ দেন। ২০১৬ সালে পদোন্নতি পান সহকারী কোচ হিসেবে। পেস বোলিং কোচ ওয়ালশের আগে তাঁর নামটিই আসার কথা অন্তর্বর্তী প্রধান কোচ হিসেবে। সেটা হয়নি কারণ তার আগেই হ্যালসলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
হ্যালসলের বিপক্ষে অভিযোগ ছিল, দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের ব্যাপারে বোর্ড কর্তাদের কান ভারী করতেন তিনি। দু-একজনের ব্যাপারে নাকি ভুল-ভাল তথ্যও উপস্থাপন করেছেন। বিষয়গুলো প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় বিসিবি একরকম বাধ্যতামূলক ছুটিই দিয়ে দেয় তাঁকে। তবে বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২০ মার্চ বিসিবিকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন হ্যালসল। বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়, পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন হ্যালসল।
সেই রিচার্ড হ্যালসলকেই কাল ঝড়-বাদলের দিনে দেখা গেল পুরোনো ঠিকানা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। সদ্য সাবেক হয়ে যাওয়া কর্মক্ষেত্রে আসার কারণ কী? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে হ্যালসল নিলেন সৌজন্যের আশ্রয়, ‘আমি আসলে ধন্যবাদ দিতে এসেছি। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। বোর্ডের অন্যদেরও ধন্যবাদ জানালাম এখানে কাটানো সময়গুলোর জন্য। আমি যে কাজটি করতে ভালোবাসি, সেটা করতে তাঁরা আমাকে সাহায্য করেছেন।’
হ্যালসলের বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার কারণ মোটামুটি সবারই জানা। কিন্তু এ নিয়ে হ্যালসল কী বলেন? তাঁর মুখেও বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিরই কথা, ‘কারণটা পুরোপুরিই পারিবারিক। আমার বাচ্চারা ছোট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেকটাই সময় কেড়ে নেয়। পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়। এটিই পদত্যাগের কারণ।’
বাংলাদেশে তাঁকে নিয়ে যে আলোচনা তার সবই যেন গুজব! বাংলাদেশের সঙ্গে হিসাব চুকে যাওয়ার পর আজ থেকেই ইংলিশ কাউন্টি দল সাসেক্সের একাডেমি পরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার কথা হ্যালসলের। বাংলাদেশের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘সিনিয়র খেলোয়াড়দের অবশ্যই নিজস্ব মতামত আছে। আমি সব সময় চেষ্টা করেছি বাংলাদেশ দলকে সেরাটা দিতে। সিনিয়র খেলোয়াড়দের কারও সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা ছিল না। এসব নিয়ে কিছু জানা নেই আমার।’
লম্বা সময়ের কর্মক্ষেত্রকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানোর মুহূর্তে কিছু পরামর্শও দিয়ে গেলেন সাবেক সহকারী কোচ, ‘খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ দিয়ে দেখভাল করলে, সমর্থন দিলে তাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চটা পাওয়া যাবে। যারা দলে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে লড়ছে, তারা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দলে ভালো একঝাঁক সিনিয়র ক্রিকেটার আছে। কিন্তু শুধু তাদের দিয়েই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে ম্যাচ জেতা যাবে না। আরও ক্রিকেটার তুলে আনতে হবে। সেটিই পরামর্শ থাকবে। সিনিয়রদের পাশাপাশি উঠতিদের সামর্থ্যটাও বের করে আনতে হবে।’
সিনিয়রদের ব্যাপারে নিজের পুরোনো মতামতটাই কি এবার একটু অন্যভাবে দিলেন হ্যালসল!
Prothom alo