যুক্তরাজ্যের নতুন হোম সেক্রেটারি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাজিদ জাভিদ। পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত উদার অভিবাসন নীতিতে বিশ্বাসী এই কনজারভেটিভ নেতা অ্যাম্বার রাডের পদত্যাগের ফলে নতুন দায়িত্ব পেলেন। এটা ব্রিটিশ রাজনীতির হিসেবে।
কিন্তু সাজিদের হোম সেক্রেটারি হওয়ায় উল্লাসিত তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠরা। তাদের উল্লাসের কারণ, সাজিদ অভিবাসন প্রশ্নে উদারনীতিতে বিশ্বাসী এবং তারেক জিয়ার পূর্ব পরিচিত। তারেক জিয়া অন্তত দুবার নবনিযুক্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেছে, এমন কথা শোনা যায়। এর ফলে তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো প্রলম্বিত হতে পারে বলে ধারনা করছেন অনেকে।
ব্রিটেনের সাবেক হোম সেক্রেটারি অ্যাম্বার রাড ছিলেন অভিবাসন প্রশ্নে অত্যন্ত কঠোর। সম্প্রতি তার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের দুদফা বৈঠক হয়েছিল তারেক জিয়ার প্রত্যার্পন প্রক্রিয়া নিয়ে। এরকম দণ্ডিত ব্যক্তিকে ব্রিটেনে না রাখার ব্যাপারে রাড নীতিগত সম্মতি দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। কিন্তু অভিবাসন প্রশ্নে তাঁর কিছু নীতি ও সিদ্ধান্ত তীব্র ভাবে সমালোচনার মুখে পড়ে। অবশেষে তিনি পদত্যাগ করেন।
নীতির দিক থেকে সাজিদ সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুর বাসিন্দা। ৪৮ বছর বয়সী নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (হোম সেক্রেটারি) নিজেও একজন অভিবাসীর সন্তান। অভিবাসন প্রশ্নে ব্রিটিশ সরকারের নীতির সমালোচক তিনি। তাছাড়া সবথেকে বড় কথা, যুক্তরাজ্যে তারেক জিয়াকে রাখার পক্ষে যে বলয়, তাঁর অন্যতম একজন হলেন সাজিদ। সাজিদ জাভিদের সঙ্গে তারেক জিয়ার দুদফা বৈঠক হয়েছিলো বলে জানা যায়। ওই বৈঠকে কি কথা হয়েছিলো সে সম্পর্কে কিছু জানা না গেলেও সাজিদের নিয়োগে তারেক জিয়া যে বেশ খানিকটা লাভবান হবেন তা বলাই বাহুল্য।
বাংলা ইনসাইডার
আর পড়ুন>>বার্নিকাটের সঙ্গে ভোট নিয়ে কথা হয়নি: কাদের
আগের রাতে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাটের সঙ্গে আলোচনায় আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গ স্থান পায়নি বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কথা বলেছি তিস্তা চুক্তি, রোহিঙ্গা এবং জঙ্গিবাদ সমাধানের কথা।’
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিক লীগ আয়োজিত আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন কাদের। এ সময় তিনি আগের রাতে মার্কিন দূতাবাসে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাদের নৈশভোজে যাওয়া নিয়ে কথা বলেন।বরাবর জাতীয় নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য দূতাবাস বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো পশ্চিমা শক্তিগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ করে। নৈশভোজ বা মধ্যাহ্নভোজের মতো আয়োজন হয় ভোটের আগে আগে।
এ কারণে সোমবার বার্নিকাটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের এই বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গণে ঔৎসুক্য হয়েছে।আগের রাতের আয়োজনে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বার্নিকাটের সাক্ষাৎ ছাড়াও কাদেরের সঙ্গে তার আলাদা মিনিট পাঁচেক বৈঠক হয়েছে।বার্নিকাটের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি গত ২২ থেকে ২৪ এপ্রিল ভারত সফরের কথাও তুলে ধরেন। কাদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোন বিষয় নিয়ে কোন কথা আমরা বলিনি।’
‘কারও, কোন দলের বিরুদ্ধে কোন নালিশ করিনি। আসন্ন নির্বাচনে কোন প্রকার সমর্থন বা এ সংক্রান্ত কোন অনুরোধ এই দুই দেশের কাছে আওয়ামী লীগ করেনি।’‘ভারতে গিয়ে আমরা আমাদের নির্বাচন সংক্রান্ত কোন কথা বলিনি। আমরা জাতীয় স্বার্থ নিয়ে কথা বলেছি। বলেছি তিস্তা চুক্তি, রোহিঙ্গা এবং জঙ্গিবাদ সমাধানের কথা।’
‘একইভাবে আমি বলছি আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের দাওয়াতে আমরা ডিনারে এটেন্ড করেছিলাম। এর জন্যও তিনি অনেক আগ থেকে দাওয়াত দিয়ে রেখেছিলেন।’‘কারও বিরুদ্ধে কোন নালিশ আমরা করিনি। বিএনপিকে নিয়ে জনসভা ও অন্যান্য প্রোগ্রামে যা বলি তা ভারত বা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বলিনি। কোন নালিশ করিনি।’
ভারত সফরের কারণ জানিয়ে কাদের বলেন, ‘ভারতের বিজেপির সেক্রেটারি জেনারেল একটা সরকারি প্রোগ্রামে বাংলাদেশে এসেছিলেন। আমার সাথে দেখা হয়নি। কিন্তু আমাদের অনেকে তার সঙ্গে ব্রেকফাস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে একটা ডেলিগেশন নিয়ে ভারত সফরে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। পার্টি টু পার্টি রিলেশন উন্নয়নে। ওই সময় একটা সুইটেবল টাইম মেলানো যায়নি বলে এইবার গিয়েছিলাম।’
‘এখানে অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না। সফরের সময় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। কিন্তু আমরা একবারও আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় ও দল নিয়ে কথা বলিনি।’
বিদেশিদের কারও পক্ষে ক্ষমতায় বসানো সম্ভব নয় জানিয়ে কাদের বলেন, ‘জনগণ চাইলে কেউ আমাদের হটিয়ে দেবে তার কোন সুযোগ নেই বলে আমার বিশ্বাস।’দলের নেতাকর্মীদের সংযত আচরণ করার পরামর্শও দেন কাদের। বলেন, ‘এখন ক্ষমতায় আছি বলে আরও ৫০ বছর থাকব, এ ধরনের অহঙ্কার করা ঠিক না।’‘তাই আমি আশা করি আমাদের খুব সংযতভাবে বলতে হবে, দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে, মাইক পেলেই আবেগে যা খুশি তা বলা যাবে না।’
মে দিবসের আয়োজনে শ্রমিকদের জন্য সরকারের পরিকল্পনাও তুলে ধরেন সড়কমন্ত্রী। বলেন, ‘আদমজির মত বিগ সাইজ না হলেও ছোট মিল করে হলেও আদমজি এলাকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’
‘প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী কথা দিয়েছেন। তিনি কথা দিলে তা রাখেন। এজন্য তাকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে।’
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান।
ঢাকাটাইমস