আইপিএল পয়েন্ট টেবিলে কার কী অবস্থান,আইপিএলে মোস্তাফিজ কি একেবারে খারাপ বোলিং করছেন?

# ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ
# ৭ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস

দেখতে দেখতে এবারের আইপিএল অর্ধেকটা পথ পেরিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই পয়েন্ট টেবিলে বেশ কয়েকবার ওলট-পালট ঘটেছে। শীর্ষস্থানের জন্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে কিছু দলের মধ্যে। কয়েকটি দল আবার প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো খেলতে পারছে না। আসুন, দেখে নিই আইপিএলের এ পথ পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলে দলগুলোর অবস্থান:

 

আইপিএলে মোস্তাফিজ কি একেবারে খারাপ বোলিং করছেন?

‘ডট’ বল দেওয়ায় বুমরার চেয়ে পিছিয়ে মোস্তাফিজ। ছবি: টুইটার

• মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বোলারদের মধ্যে ‘ডট’ দেওয়ার তালিকায় মোস্তাফিজ তৃতীয়
• তবে বাউন্ডারি হজমে মুম্বাই সতীর্থদের ছাপিয়ে গেছেন মোস্তাফিজ

২০১৬ সালে আইপিএলে প্রথম পা রাখার আগেই মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, কখন বেশি কার্যকর? ম্যাচের শুরুতে না শেষে? দুই বছরের ব্যবধানে আইপিএলে এবার সেই মোস্তাফিজকে ঘিরেই জেগেছে নতুন প্রশ্ন—ঠিক কতটুকু কার্যকর?

এর জবাব দিতে পারে পরিসংখ্যান। আবার এই পরিসংখ্যান দেখেই যদি উল্টো প্রশ্ন করা হয়, এই প্রশ্নটাই বা কতটুকু যৌক্তিক?
আইপিএলে এ পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। এর মধ্যে শুধু একটি ম্যাচে মোস্তাফিজকে ছাড়াই মাঠে নেমেছে মুম্বাই। এই ৬ ম্যাচে মোট ২৩.৩ ওভার বোলিং করেছেন। অর্থাৎ মোস্তাফিজকে দিয়ে প্রতি ম্যাচেই বোলারদের ৪ ওভারের কোটা পূরণ করার চেষ্টা করেছেন মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এটা প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের এ পেসারের ওপর তিনি আস্থা রাখেন। কিন্তু ঠিক কী কারণে যেন মোস্তাফিজের ওপর ভাগ্যদেবীর কোনো আশীর্বাদ নেই!

৬ ম্যাচে ৭ উইকেট নেওয়ার বিনিময়ে ১৯৬ রান দিয়েছেন মোস্তাফিজ। ওভার প্রতি রান দিয়েছেন ৮.৩৪ গড়ে। তেমন একটা ভালো নয়। কিন্তু পরিসংখ্যান সেটা বলে না, ৬ ম্যাচে চাপের মুহূর্তে মোস্তাফিজের হাতেই বল তুলে দিয়েছেন রোহিত। বাংলাদেশের এই পেসার অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান যে একেবারেই দিতে পারেননি তা নয়।

সানরাইজার্সের বিপক্ষে এবার মুম্বাইয়ের প্রথম ম্যাচে ১৯তম ওভারে ১ রানে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। সেই ম্যাচে ২৪ রানে তাঁর শিকার মোট ৩ উইকেট। এ ছাড়া আর কিছু ম্যাচেও শেষ দিকে দারুণ বোলিং করে জয়ের সুবাস পাইয়ে দিয়েছেন সানরাইজার্সকে। এর উল্টো নজিরও আছে। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে শেষ ওভারে ১১ রান আটকাতে পারেননি মোস্তাফিজ। এ ছাড়া রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে শেষ দিকে চাপের মুখে এক ওভারে ১ উইকেট নিলেও দিয়েছিলেন মহামূল্যবান ১৫ রান।

মোস্তাফিজের এই ব্যর্থতাগুলোই বেশি করে চোখে পড়ছে। কিন্তু কেন এমন ঘটছে?
১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতির পেসারদের সাধারণত বৈচিত্র্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। সাধারণ সিম ডেলিভারি ছাড়াও কাটার-স্লোয়ার ছাড়তে হয়। এই আইপিএলে মোস্তাফিজের ডেলিভারিগুলোর মিশ্রণ ঠিক হচ্ছে না। মানে, সিম, কাটার, স্লোয়ারের মিশ্রণটা ঠিক নিখুঁত হচ্ছে না, যে ব্যাটসম্যান প্রতি মুহূর্তেই দ্বিধায় থাকবেন।

বোকা বনে যে যাচ্ছেন না, তা নয়। মুম্বাইয়ের সব বোলারদের মধ্যে ‘ডট’ দেওয়ায় মোস্তাফিজ শীর্ষ তিনে আছেন। জসপ্রীত বুমরা (৬৮), মৈনাক মারাকান্দের (৫১) পরেই আছেন মোস্তাফিজ (৫০)। ভারতের দুই বোলারের চেয়ে মোস্তাফিজ এক ম্যাচ কম খেলেছেন।

চাপের মুহূর্তে ‘ডট’ দেওয়ার দক্ষতাও যদি ধরা হয়, সেখানেও মোস্তাফিজ খারাপ নন। দিল্লির বিপক্ষে ম্যাচের শেষ ওভারে ১১ রান দিলেও প্রথম দুই বলে ১০ রান দেওয়ার পর টানা তিন বল ‘ডট’ দিয়েছিলেন মোস্তাফিজ।

এতে বোঝা যায় তাঁর ভালো ডেলিভারিগুলো ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন প্রশ্ন। কিন্তু ওভারে যে দু-একটা বাজে ডেলিভারি করছেন ব্যাটসম্যানরা সেগুলো থেকেই ফায়দা লুটে নিচ্ছেন। ৬ ম্যাচে মোস্তাফিজের মোট ১৪১টি বৈধ ডেলিভারির মধ্যে ‘ডট’ ৫০টি আর বাউন্ডারি ২৭টি। এর মধ্যে ১৯টি ছক্কা ও ৮টি চার।

বাউন্ডারি হজমে মোস্তাফিজ মুম্বাই সতীর্থদের ছাপিয়ে গেলেও ‘ডট’ বলের হিসাব বলছে, ধারটা আগের মতোই আছে। শুধু ওই বোলিং বৈচিত্র্যের মিশ্রণটা ঠিক হলেই হয়তো আশার সলতেটা আরও বেশি করে জ্বলে উঠবে।
Prothom alo