ঢাকায় গোপন বৈঠক থেকে বিএনপির ১৭ নেতা আটক: পুলিশ

রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ন টাওয়ারে গোপন বৈঠক করার সময় বিএনপির ১৭ জন নেতাকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
রোববার বিকালে পুলিশ তাদের আটক করে।আটককৃতরা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামসুল হুদা, সহসভাপতি ইউনুছ মৃধা, যুগ্ম সম্পাদক কে এম জোবায়ের, আলমগীর হোসেন, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গোপন বৈঠকের অভিযোগে ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।বিএনপি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচির প্রস্তুতি ও গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর প্রচারে কৌশল ঠিক করতে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতারা বাংলামোটরে একটি ভবনে বৈঠকে বসেন।বৈঠক শুরুর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ তাদের আটক করে।

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় রোববার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কারাবন্দী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনকে দমন করার উদ্দেশ্যেই বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর জুলুম চালানো হচ্ছে এবং গ্রেফতার করা হচ্ছে। সারা দেশে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এসব নিপীড়ন করে সরকার যেমন জনগণের রোষ থেকে রেহাই পাবে না, তেমনি দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলনকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তিনি আটক নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

গাজীপুরের এসপি হারুনকে প্রত্যাহার দাবি বিএনপির

মোশাররফ

 

গাজীপুরের পুলিশ সুপারকে (এসপি) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।রোববার সকালে গাজীপুর সিটি নির্বাচন উপলক্ষে টঙ্গী থানা বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের স্বার্থে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে রিটানিং অফিসারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে তাকে প্রত্যাহার করতে হবে। গাজীপুরের পুলিশ সুপার প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে অনির্বাচিত সরকার। জনগণের ভোটে সরকার হয়নি, তাই এ সরকার জনগণের সরকার নয়। জনগণের প্রতি এ সরকারে কোন জবাবদিহিতা নাই এবং গণতন্ত্রের প্রতি সামন্যতম শ্রদ্ধাবোধ নাই।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর যতগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে আপনারা দেখেছেন সেখানে কিভাবে জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে ভোট ছিনিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং জনগণ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে সেই লক্ষ্যে বলতে চাই। ভোটের আগের রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার অনেক উদাহরণ ইতোমধ্যে আছে। আমরা আশঙ্কা করি এ ধরণের কর্মকান্ড সরকার দলীয় প্রার্থীরা করতে পারে।

মোশাররফ আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে উদ্বিগ্ন যে, ২০দলীয় ঐক্যজোটের সিদ্ধান্তের কারণে গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমির এস এম সানাউল্লাহ তার মেয়র পদ প্রত্যাহার করে আমাদের প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারকে ধানের শীষে ভোট দিতে সমর্থন দিয়েছেন। আমাদের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার অপরাধে ২৭ এপ্রিল শুক্রবার এসএম সানাউল্লাহসহ ৪৫জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তিনি বলেন, যে সদিচ্ছা নিয়ে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। নির্বাচনের প্রথম থেকেই আমাদের প্রত্যাশা ও আশাকে ভঙ্গ করেছে। আজকে প্রশাসনের হস্তক্ষেপেই তাদের গ্রেফতার করে মামলা দেওয়া হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ২০দলীয় নেতা কর্মীরা যদি স্বচ্ছন্দে নির্ভয়ে প্রচার-প্রচারণা করতে না পারে তবে আমরা কিভাবে আশা করবো এ নির্বাচনী এলাকায় ভোটাররা নির্ভয়ে তাদের ইচ্ছামত ভোট দিতে পারবে।

গ্রেফতার হওয়া সানাউল্লাহসহ ৪৫ জনকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দাবি করে করে তিনি বলেন, তাদেরকে মুক্তি না দিলে এ সিটি নির্বাচনে একটা খারাপ সিগন্যাল হয়ে যাবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার তথা নির্বাচন কমিশনকে এর জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রশাসনকে এখানে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিতে হবে। যারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্বপালন করছেন না তাদের অনতিবিলম্বে এ নির্বাচনী এলাকার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ২০ দলীয় জোট মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার, বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মাজহারুল আলম ও জেলা বিএনপির সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শওকত হোসেন সরকার প্রমুখ।
Jugantor