বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন কারাগারে মেডিক্যাল বোর্ডের ডাক্তাররা দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) যেসব ওষুধপত্র দিয়েছেন সেগুলো কোনো কাজ করছে না। ওইগুলো তার রোগের প্রশমনে বা যন্ত্রণা লাঘবে কাজ করছে না। এসব পরিস্থিতিতেও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছেন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল বিকেলে পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান। বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খান কারাগারে প্রবেশ করেন। খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ শেষে তারা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। দেশবাসী যেন তার সুস্থতার জন্য দোয়া করেন এবং এই যে একটা দুঃসময় চলছে জাতির জন্য, দেশের জন্য, অবিলম্বে এই দুঃসময়ের যেন অবসান ঘটে সে জন্য দোয়া চেয়েছেন তিনি। গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য নেতাকর্মীদের তিনি সাহসের সাথে আন্দোলন করে যেতে বলেছেন।
দলের চেয়ারপারসনের অসুস্থতা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমরা তাকে যা দেখেছি তাতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছি। তার শরীর ও স্বাস্থ্য আসলেই খারাপ। তিনি যে বর্ণনা দিয়েছেন তার বাম হাত আস্তে আস্তে শক্ত হয়ে যাচ্ছে। এটা স্টিফ হচ্ছে। ওজনও বেড়ে গেছে বাম হাতের। বাম পা থেকে শুরু করে গোটা বাম দিকে পেছনে পর্যন্ত সেই ব্যথা বেড়ে গেছে। সাধারণভাবে হাঁটা চলা করা তার জন্য মুশকিল হয়ে পড়েছে। আর্থ্রাইটিসের যে সমস্যা সেটা আস্তে আস্তে নিউরো প্রবলেমের সৃষ্টি করছে, চিকিৎসকেরা বলেছেন এটা স্টিফ হয়ে গেলে প্যারালাইসিসের দিকে চলে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, তার ডান চোখ লাল হয়ে আছে। এটা বেড়ে গেলে তাতে চোখ তিগ্রস্ত হতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এখনো বলছি, আর বিলম্ব না করে দ্রুত তিনি যে ইউনাইটেড হাসপাতালে যেতে চেয়েছেন, সেই হাসপাতালে রেখে তাকে বিশেষভাবে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন। এটা সরকারের দায়িত্ব। যদি এর কোনোরকম ব্যত্যয় ঘটে বা তার কোনোরকম শারীরিক তি হয় তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
তিনি বলেন, কারাগারে মেডিক্যাল বোর্ডের ডাক্তাররা দেশনেত্রীকে যেসব ওষুধপত্র দিয়েছেন সেগুলো কোনো কাজ করছে না। ওইগুলো তার রোগের বা যন্ত্রণা যে লাঘব করা- সেটা কাজ করছে না। এ ছাড়া তার প্রয়োজন পরিবেশটা পরিবর্তন। এই পরিবেশে সুস্থ লোকও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল এই তিন নেতা অনুমতি নিয়ে সাাতের জন্য গেলেও অসুস্থতার কারণে সাাৎ পাননি। সর্বশেষ গত ৬ এপ্রিল মির্জা ফখরুল একা কারাগারে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেন। এর পরদিনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তাকে এক্সরের জন্য নেয়া হয়। তারও আগে গত ২৯ মার্চ বেগম জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুল সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু হঠাৎ তা বাতিল করেছিল কারা কর্তৃপক্ষ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ওই কারাগারে রাখা হয়েছে। সেখানে তিনিই এখন একমাত্র বন্দী। তার মুক্তির দাবিতে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপিসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন।
Naya Diganta