বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে ৭ দিন ধরে অবস্থান করলেও তাকে ফেরত আনতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। একইসঙ্গে মোশাররফ বলেছেন, ‘তারেক রহমান সময় মতো স্বেচ্ছায় দেশে ফিরবেন, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছেয় নয়।’
শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
কারও কথায় নয়, তারেক রহমান স্বেচ্ছায় বীর বেশে দেশে ফিরবেন দাবি করে মোশাররফ বলেন, ‘তারেক রহমান যেদিন বলবে আমি বাংলাদেশে যাব, বাংলাদেশ আমার জন্য নিরাপদ সেদিনই কেবল তিনি ফিরবেন। তার আগে নয়। তারেক রহমান ব্রিটিশ আইন মোতাবেক সে দেশে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার তার লন্ডনে অবস্থান নিয়ে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেছে। সরকার তাকে সহ্য করতে পারছে না।’
বাংলাদেশে সাজা হওয়ায় তারেক রহমান ব্রিটিশ সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেখানে তিনি পলিটিক্যাল এসাইলামে (রাজনৈতিক আশ্রয়) আছেন। কেউ রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকলে তার পাসপোর্ট ওই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা রাখতে হয়। তাকে একটি ট্রাভেল ডকুমেন্ট দেয়া হয়। এটা ব্রিটিশ নিয়ম। রাজনৈতিক আশ্রয় পেলে ওই ব্যক্তি যতদিন না বলবেন আমার নিজের দেশে যাওয়ার পরিবেশ হয়েছে ততদিন পর্যন্ত আশ্রয়দাতা দেশ তাকে জোর করে ফেরত পাঠাবে না।’
‘যে কোনও মূল্যে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে’- শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে অষ্ট্রেলিয়া পৌঁছে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এমন বক্তব্যের পর প্রতিক্রিয়ায় খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যদি ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মমন্ত্রণালয়ের সামনে ৭ দিন ধরেও অবস্থান করেন, তবুও তারেক রহমানকে ফেরত আনতে পারবেন না। শেখ হাসিনা যেভাবে তাকে আনতে চায় সেভাবে আনা যাবে না।’বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছে। নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। আমাদের দাবি সুচিকিৎসার স্বার্থে তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া হোক। যেন তিনি মুক্ত হয়ে পছন্দ মতো চিকিৎসা করতে পারেন। অন্যথায় তাঁর কারাবাস দীর্ঘায়িত হলে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।’তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নেত্রীকে বাইরে রেখে এই সরকার আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন করতে চায়। এটা হতে দেয়া হবে না। খালেদার মুক্তি ও একাদশ নির্বাচন একইসূত্রে গাঁথা। তাই খালেদা জিয়ার মুক্তি ব্যতিত নির্বাচন অসম্ভব।’
মোশাররফ বলেন, ‘আমরা কষ্টে আছি আর আওয়ামী লীগ আতঙ্কে আছে। কারণ তারা জানে, সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে কোনভাবেই জিততে পারবে না। কারণ জনগণ তাদের সঙ্গে নেই।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজে অবৈধ, তাঁর সরকারও অবৈধ। অথচ আজ তারা তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এখন আবার বলছে নাগরিকত্বর সঙ্গে পাসপোর্টের সম্পর্ক নেই। এরা এতো জঘন্য, এতো মিথ্যাবাদী যা বলার মতো নয়। খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার মাধ্যমে তারা গণতন্ত্রের দুয়ার আটকে দিয়েছে। আজ আমাদের সকল শৃঙ্খল, সকল তালা ভেঙে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।’
দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন- মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নূরে আরা সাফা, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মাওলানা মো. মালেকসহ মহিলাদলের নেত্রীরা।
ব্রেকিংনিউজ