এবার বিজেপির আমন্ত্রণে ভারত যাচ্ছে বিএনপি প্রতিনিধি দল

আওয়ামী লীগের ভারত সফরের পর এবার বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ভারত সফরে যাচ্ছে। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র আমন্ত্রণে আগামী মাসে বিএনপির প্রতিনিধি দলটি দিল্লি সফরে যেতে পারে বলে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে জানাগেছে।

ভারতের বিজেপি’র একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানাগেছে, দিল্লি সফরের সময় বিএনপি’র প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও বিজেপি’র সভাপতি অমিত শাহ ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের আমন্ত্রণে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি আগামী মাসের শেষের দিকে ভারত সফরে আসতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি’র এক ভাইস চেয়ারম্যান এ সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, বিজেপি’র একজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে বিএনপির নীতি নির্ধারক স্তরের এক নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। সব কিছু পজিটিভ। আগামী মাসে এ সফর হতে পারে। তবে এই সফরের বিষয়ে বিজেপি বা বিএনপি কোন পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি।

এদিকে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাও বিএনপির ভারত সফরের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর শ্রিংলা বলেছেন, বাংলাদেশের যেকোনো রাজনৈতিক দল ভারত সফর করতে পারে। তাদের অবশ্যই স্বাগত জানানো হবে। আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের সদ্য সমাপ্ত দিল্লি সফরের পর বিএনপি ভারত সফরে আগ্রহী। এমন প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের প্রধান দুই দলের ভারত সফর এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র শীর্ষনেতাদের সঙ্গে বৈঠককে রাজনৈতিক দল টু রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক উন্নয়নের অংশ হিসেবে বলা হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লষকরা বলেছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, সামনে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন। এ কারণে বাংলাদেশের প্রধান দুই দলই চাইছে দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতি করতে।

উৎসঃ আমাদের সময়

ডিনার পার্টিতে ভারতের অনেকেই বলেছেন, আ’ লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে: ওবায়দুল কাদের
ভারত সফরকালে ‘একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কোনও কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে দেশটির সরকার গুরুত্ব দিয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন ডিনার পার্টিতে ভারতের অনেকেই বলেছেন, আওয়ামী লীগ আগামীতেও ক্ষমতায় আসবে। তবে একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মোদি কোনও কথাই বলেননি।’

বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন হবে, অনেক দলই নির্বাচনে অংশ নেবে। ভারত কি আমাদের ক্ষমতায় বসাবে? তারা কি কখনও ক্ষমতায় বসিয়েছে? ২০০১ সালে আমরা হেরে গেছি। ভারত কি আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে? ভারত এটা করে না। আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। কোনও বিদেশি শক্তি নয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ভারত সফরে গেছি। ভারত সরকার আমাদের অনেক গুরুত্ব দিয়েছে। নরেন্দ্র মোদি আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। প্রায় বত্রিশ মিনিট তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি কথা বলেছেন, আমাদের কথা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছেন। আমরা দেশের জন্য জনগণের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই সফরে শিক্ষা থেকে শুরু রোহিঙ্গা ইস্যু, কোনও কিছুই বাদ পড়েনি। দেশের জনগণের স্বার্থ তুলে ধরেছি। আমরা জানিয়েছি, তিস্তাচুক্তি হলে জনগণের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।’

তারেক রহমানের পাসপোর্ট সম্পর্কে একপ্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির একেক নেতা একেক কথা বলছেন। খাদের কিনারে এসে লাফালাফি করছেন। এখন বলছেন, তারেক রহমান রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। এতদিন স্বীকার করেননি। ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দেরে। বিএনপিকে আগে বলেছি প্যাথোলজিক্যাল লায়ার, এখন বলছি পূর্ণ মিথ্যাবাদী।’

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক মন্তব্যের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল কি চিকিৎসক? চিকিৎসকরা বলুক। কিভাবে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনিত হয়েছে? কদিন আগে আমরা তাকে স্বাভাবিক দেখেছি। দৃশ্যত কোনও অবনতি দেখিনি। ভেতরে যদি কোনও সমস্যা হয়ে থোকে, তবে মেডিক্যাল বোর্ড দেখে বলুক। সরকার অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রচারণায় অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যে এলাকার নির্বাচন, সে এলাকার যারা ঢাকায় রয়েছেন, কেবল তারাই নির্বাচনি এলাকায় যাবেন। অযথা ভিড় বাড়িয়ে লাভ নেই। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে বিরক্ত করবেন না।

ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হানিফ, আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
পূর্বপশ্চিম