ফের লন্ডন মিশনে সিনহা, এবার কী ঘটবে?

সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সহসাই দেশে ফিরছেন। সরকারের অনুগত মিডিয়ার খবরে বলা হচ্ছে, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেই তিনি দেশে আসছেন । গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা তাঁকে টেলিফোনে বলেন, ‘আপনি ফিরে আসুন। আমাদের কোনো গ্রিভেন্স নেই। তবে পাগলামী করবেন না।’ তবে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, দেশে অবস্থানরত শুভকাঙ্খিদের নির্দেশনা পেয়েই তিনি স্বদেশমুখী হচ্ছেন।

এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য খবর হলো, সিনহাপত্মী সুষমা স্বামীর সাথে অল্পকিছু সময় কাটিয়ে ইতোমধ্যেই ঢাকায় ফিরে এসেছেন। অন্যদিকে, সম্প্রতি সুরেন্দ্র সিনহা চার দিনের জন্য ভারতে ঘুরে এসেছেন, বলে জানা গেছে। সেখান থেকে গ্রীন সিগনাল পেয়ে দেশে ফেরার জন্য তৈরী হচ্ছেন।

উল্লেখ্য, সংবিধানের ষোড়শ সংশধানী বাতিল করে দেয়া রায়কে কেন্দ্র করে গত আগস্ট থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সঙ্গে ব্যাপক বিরোধ সৃষ্টি হয়। সরকারের চাপাচাপি, নানা হুমকি ধামকির মধ্যে বিচারপতি সিনহার নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ বিশেষ আদালত বসিয়ে বিনাভেটের বর্তমান সংসদ ও হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে একটি রায় দেন বলে বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশ, তবে জননিরাপত্তার অযুহাতে রায়টি অপ্রকাশিত থাকে। পরে নানা অনাসৃষ্টির মধ্যে

অস্ত্রের মুখে বিচারপতি সিনহা ছুটি নিয়ে দেশ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়া যান, কিন্তু ছুটির শেষ হওয়ার পরে আর দেশে ফিরতে পারেননি।

এ সময় সরকার প্রচার করে- সিঙ্গাপুরে পদত্যাগ করেছেন প্রধান বিচারপতি। দেশে ফিরতে না পেরে তিনি কানাডায় নিজ মেয়ের কাছাকাছি বসবাস শুরু করেন। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় পদত্যাগের খবরটি ছিল সরকারের একটি সাজানো নাটক মাত্র। অবশেষে ৩১ জানুয়ারী নির্ধারিত তারিখেই তিনি অবসরে যান।

অবশ্য কারো কারো মতে, আগামীতে দেশে তত্ত্বাবধায়ক গঠন হলে সেই সরকারের প্রধান হতে বিচারপতি সিনহার ডাক পড়তে পারে।

কেননা, আগামী ২০২১ সালের শেষ দিন পর্যন্ত তিনিই থাকবেন সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। ষোড়শ সংশোধানীর বিস্তারিত রায়ে বিচারপতি সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগে প্রকাশ করে, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধানীর রায়ে পরিস্কার করে বলা ছিল- আগামী দু’টি নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে হতে পারে। এর ফলে বিলুপ্ত হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরত আসার রাস্তাা বিচারপতি সিনহা নিজেই তৈরী করে রেখেছেন বলে কারও কারও অভিমত।

বেগম খালেদা জিয়ার কারারুদ্ধ হওয়ার পরে দেশী বিদেশী নানামুখী তৎপরতা, মার্কিনীদের ঘন ঘন সফরের মধ্যে বিচারপতি সিনহার প্রত্যাবর্তনের খবরে সরকারের ভেতরে প্রবল

reportbd24.com

ভারতের পক্ষে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে: কাদেরকে ফখরুল

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ভারতের পক্ষে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে- তা জানতে চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত বৌদ্ধ নাগরিক আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ক’দিন আগে আওয়ামী লীগের ১৯ জনের একটি টিম গিয়েছিল ভারতে সেই দেশের ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সাথে সাক্ষাত করার জন্য। খ্বু ভাল কথা। আমরা এই ধরনের সফরকে সব সময় স্বাগত জানাই। কারণ এতে করে দু’দেশের মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সু-সম্পর্ক তৈরি হয়। আমিও তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে কিছুদিন আগে চীনে গিয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতারা ভারত থেকে এসে কী বললেন? তারা বললেন- ভারত বলেছে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে ভারত ইন্টার ফেয়ার করবে না। কথাটার অর্থ কি?

কেউ কি বলেছে ভারত বাংলাদেশের নির্বাচনে ইন্টার ফেয়ার করবে? ওনাকে (ওবায়দুল কাদের) কি ভারত দায়িত্ব দিয়েছে এ কথাটি বলার জন্য। এটা আমরা এখনও পর্যন্ত বুঝতে পারছি না- তিনি কার কাছে থেকে এ দায়িত্ব পেলেন? তাকে কে দিল এই অধিকার?’

ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য আন্তজাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা বড় সমস্যার সৃষ্টি করবে দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘ভারতের পক্ষে কথা বলার অধিকার তাকে কেউ দেয়নি। এটা গোটা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় মনে করি ভারত আমাদের সবচেয়ে নিকটতম বন্ধু রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকার কথা আমরা সবসময় শ্রদ্ধার সাথে স্বীকার করি। তাদের সাথে বাংলাদেশের সু-সম্পর্ক থাকুক এটা আমরা সবসময় চাই।’

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত ও কর্মক্ষম আছেন, ততদিন পর্যন্ত তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে’ আওয়ামী লীগ নেতা হানিফের এমন বক্তব্য উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজীবন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক। আমরাও তাতে খুশি হবো। কিন্তু জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসুক। গণরায় ছাড়া তো বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না।’

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘জনগণকে নিয়ে আপনারা ক্ষমতায় আসুন, জনগণ ভোট দিক আপনাদেরকে। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আপনারা ক্ষমতায় আসুন আমাদের কারও আপত্তি নেই। তাহলে কেন, কী কারণে আপনারা দেশনেত্রীকে আটকে রেখেছেন? কী অপরাধ তাঁর? একটা মিথ্যা, সাজানো, বানোয়াট মামলা দিয়েছেন তাঁর নামে।’

তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আমার তো কিছু বলার দরকার নেই। ডিজিই তো সব বলে দিয়েছেন। আপনারা বারবার কেন এই বিষয়টি সামনে নিয়ে আসছেন আমি বুঝতে পারছি না। ইট ইজ এ ডেথ ইস্যু। এটা নিয়ে এখন আর কথা বলার কিছু নেই।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘দেশে এখন গণতন্ত্র নেই। আজকের এই সরকার বিনাভোটের সরকার। মানুষ তাদের কাছে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চায়। বিচার বিভাগকে তারা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষ এখন কার কাছে যাবে, কোথায় যাবে? এই ফ্যাসবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে পরাজিত করতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক দিলীপ কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড.সুকোল বড়ুয়া, সাবেক মন্ত্রী গৌতম চক্রবর্তী, বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক বাবু দীপেন্দ নাথ, নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মো: জসিম ও সুশীল বড়ুয়া প্রমুখ।

শীর্ষনিউজ