‘বিএনপি এলে একদিনে লক্ষাধিক মানুষ হত্যা করবে’

বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন, বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় আসলে একদিনেই লক্ষাধিক মানুষ হত্যা করবে। এজন্য তাদের ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আওয়ামী লীগকেই আসতে হবে।সোমবার বিকেলে মৌলভীবাজার পৌর জনমিলন কেন্দ্রে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মীর্জা আজম বলেন, ‘অতীতেও বিএনপি আওয়ামী লীগকে কচুকাটা করেছিল। তারেক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলে আওয়ামী লীগের অবস্থা কি হবে, তা সবাইকে ভেবে দেখতে হবে।’তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র এজেন্ট ছিলেন। তিনি জন্মসূত্রেও পাকিস্তানি নাগরিক ছিলেন।’আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ছাত্রলীগের ইতিহাস। ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখা যাবে না।’আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আসাদুজ্জামান রনির সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি সৈয়দা সায়রা মহসীন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক ও পৌরমেয়র মো. ফজলুর রহমান প্রমুখ।

তারেকের পাসপোর্ট নিয়ে তোলপাড়, দেশের রাজনীতিতে হঠাৎ করে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তাপ

দেশের রাজনীতিতে হঠাৎ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তাপ। ইস্যু তারেকের পাসপোর্ট। গত ২১ এপ্রিল লন্ডনে এক সভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, তারেক রহমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করেছেন। তার এ বক্তব্য ‘ফেইক’ অবিহিত করে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমাণের আহ্বন জানান। প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ দেন তারেক রহমান। অতঃপর তারেকের পাসপোর্ট বিতর্কে ডালপালা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। সভা সেমিনার, টিভির টকশো, ফেসবুক, ব্লগ, টুইটার, প্রিন্ট মিডিয়ার রিপোর্ট, উপ-সম্পাদকীয় সর্বত্রই চলছে তারেকের পাসপোর্ট ইস্যু নিয়ে বিতর্ক। সরকার আর বিএনপির পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে রাজনৈতিক অঙ্গন। এখন সবকিছু ছাপিয়ে তারেক রহমানের ‘পাসপোর্ট ইস্যু’ নিয়ে চলছে তোলপাড়।

প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য প্রমানের জন্য বিএনপি থেকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়ার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে উল্টো বিএনপির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া হয়। বলা হয় তারেক রহমান লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করেননি তার প্রমাণ দিন। আবার প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম অভিযোগ করে বলেন, বিদেশে থেকে পাসপোর্ট ফেরত দেয়ার অর্থ হলো তারেক দেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। তার দেশে ফেরার ইচ্ছে নেই বলেই হয়তো পাসপোর্ট সারেন্ডার করেছেন।

অন্যদিকে প্রতিমন্ত্রীর দেয়া প্রমাণপত্রে ১৩টি ভুল রয়েছে এবং অভিযোগ আজগুবি মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই দেশের (ইংল্যান্ড) আইন অনুযায়ী পাসপোর্ট জমা দিয়ে ট্রাভেল পারমিট নিয়েছেন। সরকারের লোকদের পক্ষ থেকে সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করেছেন মর্মে যে প্রচার চালাচ্ছে তা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। এমনকি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা বর্তমানে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও প্রতিমন্ত্রীর প্রদর্শিত প্রমাণপত্রকে ‘নকল’ হিসেবে অবিহিত করেছেন।

‘তারেক রহমান বিদেশে থেকে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করেছেন’ প্রতিমন্ত্রীর এই বক্তব্য মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার শুরু হলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নয়াপল্টন্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তিনি তারেক রহমানের পাসপোর্ট হাইকমিশনে জমার বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দেয়া তথ্যকে ‘উড়ো খবর’ হিসেবে অবিহিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আভাস দেন। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, হাইকমিশন তো সরকারের নিয়ন্ত্রণে। তারেক রহমান পাসপোর্ট জমা দিয়ে থাকলে সেটি প্রদর্শন করে দেখান।
তিনি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন হওয়ার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে মন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা নিজের আত্মা বিক্রির সমতুল্য। অতপর তারেক রহমানের পক্ষে উকিল নোটিশ পাঠানো হয় প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও যাচাই-বাছাই না করে খবর প্রকাশ করা দুটি দৈনিক পত্রিকার বিরুদ্ধে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল স্বাক্ষরিত ওই লিগ্যাল নোটিশে ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন’ এ খবর ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে তা প্রত্যাহার করতে বলা হয়। ১০ দিনের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তারেক রহমানকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দেয়া হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তাদের সবার বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা করা হবে।

অন্যদিকে গুলশানের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, দেশে ফেরার ইচ্ছে নেই বলেই হয়তো তারেক রহমান পাসপোর্ট সারেন্ডার করেছেন। ২০০৮ সালে তিনি যখন লন্ডনে যান তখন স্মার্ট কার্ডও ছিল না। পাসপোর্ট তার একমাত্র পরিচয়পত্র ছিল। সেই পাসপোর্ট তিনি সারেন্ডার করেছেন। তিনি আবেদনও করেননি নতুন পাসপোর্টের জন্য।

নতুন পাসপোর্টের আবেদন জানিয়ে থাকলে তার রিসিপ্ট কপি দেখানোর আহ্বান জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, বিদেশে থেকে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার অর্থ হলো তিনি দেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। বিএনপি বলে আসছে তিনি চিকিৎসার জন্য সেখানে অবস্থান করছেন। এটা হাস্যকর। বিএনপির লিগ্যাল নোটিশের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি কোনো নোটিশ পাইনি। আই ওয়েলকাম ইট। এটা শুনে ভালো লাগছে যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বাংলাদেশের আদালতে আশ্রয় নেয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। কিন্তু সেই সঙ্গে আমার এই প্রশ্ন যে আদালত তারেক রহমানকে খুঁজে বেড়াচ্ছে সেই আদালতের আশ্রয় নিলে আদালত তাকে আশ্রয় দেবে কিনা?

নাগরিকত্ব ছেড়ে দিতে হলে কি কোনো আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমি জানি না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব অতদূর পড়ে না; ওটা আইনমন্ত্রীর বিষয়। আমরা যতদূর জানি ২০১৪ সালের ২ জুনের পর তারেক রহমান আন্তর্জাতিক কোনো সফর বা অন্য কোনো দেশে যাননি।

এর আগে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ২০১৪ সালের জুন মাসের ২ তারিখে ব্রিটিশ হোম অফিস (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসে একটি চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে তারেক রহমান, স্ত্রী জোবায়দা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান ও মঈনুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির পাসপোর্ট হস্তান্তর করার বিষয় উল্লেখ করা হয়। লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে সবুজ পাসপোর্ট জমা দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন তারেক রহমান।

অবশ্য এর আগে দেশের প্রখ্যাত একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্বের সম্পাদনায় প্রকাশিত অনলাইন পত্রিকায় ‘তারেকের স্ত্রী-কন্যা ইংল্যান্ডের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন’ শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশ করে পরে তাদের কাছে ভুল স্বীকার করে মিডিয়ার মাধ্যমেই ক্ষমা চেয়েছেন।

তবে তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা বিশ্বে কেউ অবৈধভাবে বসবাস করতে পারে না। চিকিৎসার জন্য তারেক রহমান বিগত ৯ বছর ধরে ব্রিটেনে আছেন বৈধভাবেই। তিনি পরিবার নিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়েই তিনি বৈধভাবে ব্রিটেনে বসবাস করছেন।

তারেক রহমান ব্রিটেনের নাগরিকত্ব নিয়েছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ একটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তার অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণের প্রশ্নই আসে না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, তারেক রহমান সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান। তিনি একজন সম্মানিত নাগরিক। তার বিরুদ্ধে সরকার ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালাচ্ছে। সরকারের মিথ্যা বক্তব্যের কারণে তারেক রহমানের জীবন এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গতকাল ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, রিজভী সাহেব চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন তারেকের ফিরিয়ে দেয়া পাসপোর্ট থাকলে তা দেখাতে। গতকাল তা মিডিয়ায় দেখিয়ে উল্টো চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম, তাদের পরিবারের পাসপোর্ট ফেরত দেয়া না হলে তারা দেখাক অথবা মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করলে তাও প্রমাণসহ বলুক।

জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে স্পষ্ট ভাষায় দেশবাসীকে জানাচ্ছি তারেক রহমান জন্মসূত্রে বাংলাদেশের একজন গর্বিত নাগরিক। তিনি তার এই প্রিয় দেশের নাগরিক ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। তারেক রহমান বিশ্বের অসংখ্য বরেণ্য রাজনীতিবিদ, সরকারবিরোধী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতোই সাময়িকভাবে বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। সঙ্গত কারণেই তা পেয়েছেন। এই প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক অংশ হিসেবেই তিনি যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিভাগে তার পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। সে দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার পাসপোর্ট জমা রেখে তাকে ট্রাভেল পারমিট দেওয়া হয়েছে। কাজেই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পাসপোর্ট তার কোনো কাজে লাগছে না। যখনই তিনি দেশে ফেরার মতো সুস্থ হবেন তখনই তিনি দেশের অন্যান্য নাগরিকের মতোই পাসপোর্টের জন্য আবেদন জানাতে এবং তা অর্জন করতে পারবেন। স্রেফ জমা রাখার জন্য ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র বিভাগ থেকে তারেক রহমানের পাসপোর্ট লন্ডন হাইকমিশনে পাঠানোর যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, তার দ্বারা কোনো আইন কিংবা যুক্তিতে প্রমাণ হয় না যে তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন।

লন্ডন সফরের একমাত্র অর্জন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সংগ্রহ করা তারেক রহমানের ২০০৮ সালে ইস্যু করা পাসপোর্টের ৩টি পাতা এবং ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র বিভাগের অসংখ্য ভুলে ভরা রহস্যজনক একটি চিঠির ফটোকপি। কী বিচিত্র এই সরকার! কী দুর্বল তাদের অপকৌশল! তথ্য প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম বলেছেন, তারেক রহমান তার পাসপোর্ট নবায়ন না করে সরকারের কাছে ফেরত দিয়েছেন। এখনও তিনি কীভাবে বাংলাদেশের নাগরিক?

এদিকে তারেক রহমানের পাসপোর্ট স্যারেন্ডার নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের উপস্থাপিত যুক্তরাজ্যের নথি নকল বলে দাবি করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, একটা দলিল নকল করার সময় যখন ভুল হয়, তখন বুঝতে হবে যিনি নকল করছেন, তিনি টেনশনে আছেন। না হলে এত ভুল হয় না। ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্ট দিচ্ছে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসিকে। বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি নামে কিছু আছে? দ্যাট ইজ বাংলাদেশ হাইকমিশন। যারা কমনওয়েলথের মধ্যে আছে তারা অ্যাম্বাসি বলে না। তারপর লেখছে স্যারস, ওরে বাবা রে… এতগুলো স্যার কোথা থেকে আসল? চিঠি যখন লিখি, তখন ১০ জন স্যারের কাছে লিখি নাকি! এরপর এই চিঠির মধ্যে এরকম করে পাসপোর্ট কথা বলা হয়েছে, বোঝাই যাচ্ছে না, এটা কী কারণে দেওয়া হচ্ছে। সবশেষে যে সই করেছে তার কোনো নাম নেই। বানান ভুল আছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, এত বিজ্ঞ রাজনৈতিক শক্তি সরকার রপ্ত করেছে, আমার প্রশ্ন জাগে, এত বুদ্ধিমান সরকার, তারা কি নাগরিকত্ব এবং একটি ট্রাভেল ডকুমেন্টের মধ্যে যে ব্যবধান, সেই সামান্য ব্যবধানটি বুঝতে পারেনি?

সাবেক আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন ‘উনি (তারেক রহমান) ভিসা নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই ভিসার একটি মেয়াদ আছে। ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে তিনি সেখানে কীভাবে থাকছেন, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন এসে যায়। সেজন্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী একথা বলেছেন যে উনি পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। এর উদ্দেশ্য কী হতে পারে? তিনি মেয়াদ বাড়ানোর জন্য পাঠিয়েছেন, অথবা পাসপোর্ট সারেন্ডার (ত্যাগ) করেছেন। এ সম্পর্কে আমার মনে হয় আরও কিছু তথ্য দরকার। সত্যতা যাচাই করা দরকার, উনি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়েছেন কিনা এবং সেই প্রেক্ষিতেই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন কিনা, সেটা এখন জানার বিষয়।

পাসপোর্টে একটি মেয়াদ থাকে। মেয়াদ শেষ হলে পাসপোর্ট ইস্যু করবে কে? বাংলাদেশের সরকারের কাছ থেকেই তো পাসপোর্ট নিয়েছে। ব্রিটিশ সরকার তো পাসপোর্ট ইস্যু করবে না। সেক্ষেত্রে উনি (পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী) হয়তো প্রিজাম্পশন (ধারণা) করেছেন। এটা তো ধারণা হয় যে বাংলাদেশে উনার (তারেক রহমান) নাগরিকত্ব নেই। সেটা দেখাতেই ব্রিটিশ সরকারকে পাসপোর্ট দিয়েছেন। সুতরাং পাসপোর্ট জমার মাধ্যমে এখন তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন এবং ব্রিটিশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন কিনা তা দেখার বিষয়। এটি না জেনে আমাদের মনে হয় কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

অবশ্য তারেক রহমানকে অবিলম্বে বাংলাদেশের আইনের আওতায় সোপর্দ করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়ে দলের নেতা আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, এই ধরনের অপরাধী ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকের স্থান যুক্তরাজ্যে হতে পারে না। তারেক রহমানের কাছে বাংলাদেশের কোনো পাসপোর্ট যদি থাকে সেটি আগে দেখাক। তিনি ওয়ান ইলেভেনের পর একবার মাত্র পাসপোর্ট রিনিউ করেছেন। এরপর ব্রিটিশ হোম অফিসের মাধ্যমে ডাকযোগে তিনি বাংলাদেশি পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করেন। সূত্র: ইনকিলাব

1newsbd