খালেদা জিয়ার শরীরের অবস্থা নিয়ে গত বেশ কিছুদিন ধরে গণমাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করার পর, বিএনপির কজন শীর্ষ নেতা রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সাথে দেখা করেন। জিয়াকে দ্রুত একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার দাবি জানান তারা। বিশেষ করে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা।
সুনির্দিষ্ট কোনো প্রতিশ্রুতি পাননি বিএনপি নেতারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলছেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন এবং তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেবেন। খবর বিবিসি
সরকারি চিকিৎসায় তাদের আপত্তি কেন?
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, খালেদা জিয়া নিয়মিত যেসব চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতেন, তাদের ওপর তার আস্থা রয়েছে এবং তাদের কাছেই তিনি শারীরিক অবস্থা নিয়ে কথা বলতে চান।নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘কার কাছে চিকিৎসা ভাল হবে, সে ব্যাপারে রোগীর পছন্দ গুরুত্বপূর্ণ।কারণ রোগীর আস্থা বা বিশ্বাস আছে, এমন চিকিৎসকের কাছেই চিকিৎসা হওয়া ভাল।’
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ই এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাকে যে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়েছিল, খালেদা জিয়া তা গ্রহণ করেননি। তিনি এখনো পুরনো ওষুধগুলোই খাচ্ছেন। চিকিৎসা সুবিধার বিবেচনাও কাজ করছে বিএনপির মধ্যে।
‘নেত্রীর অনেকগুলো সমস্যা আছে। তার বিশেষ এমআরআই করা দরকার।কারণ ওনার পায়ে মেটাল আছে।আর তার চোখ লাল হয়ে গেছে।আমাদের একজন ডাক্তার কয়েকদিন আগে উনাকে দেখে এসেছেন।সেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা বলেছি যে, ইউনাইটেড হাসপাতালে বিশেষ এমআরআইসহ সব ধরণের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুবিধা আছে।’
বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার কৃত্রিম হাঁটু সংস্থাপিত রয়েছে।আর কৃত্রিম হাঁটু সংস্থাপিত থাকলে যে ধরণের মেশিনে এমআরআই করতে হয়, সেই মেশিন শুধু ইউনাইটেড হাসপাতালেই আছে। এই বিষয়টিকেই বিএনপি নেতারা তাদের অনুরোধ বা দাবির পক্ষে যুক্ত হিসেবে তুলে ধরেছেন।
খালেদা জিয়া বাতের ব্যথায় ভুগছেন। সেই সাথে ডায়াবেটিসের কারণে তার চোখের সমস্যাও রয়েছে। তিনদিন আগে তার একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক কারাগারে খালেদা জিয়াকে দেখে এসেছেন। তিনি জানান, পায়ের ব্যথায় তিনি হাঁটাচলা করতে পারছেন না।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় রোববার শুনানিতে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়নি। মামলাটিতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেছেন, কোন ব্যাখ্যা না দিয়ে কারা-কর্তৃপক্ষ শুধু বলেছে – ‘আনফিট’ হওয়ায় তাকে হাজির করা যায়নি।
‘সবকিছু নিয়ম অনুয়ায়ী করবো’- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সরকারি হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসার এই দাবি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘ডাক্তাররা যে সব পরামর্শ দিয়েছেন, এ অনুযায়ী জেল-কোড মেনে আমরা সব ব্যবস্থা নিচ্ছি। তার যা যা প্রয়োজন হবে, সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী করবো। তারপর যদি কিছু প্রয়োজন হয়, সেগুলো আমরা তাদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়ে করবো’।
ইউনাইটেড হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার দাবির ব্যাপারে প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা এখনও সেই প্রয়োজন মনে করছি না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যদি এসব সুবিধা থাকে, তাহলে ইউনাইটেডে যাবে কেন? যদি সেটা প্রয়োজন হয় এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা পরামর্শ দেন, তখন আমরা সেটা দেখবো।’
সবাইকে জানিয়ে দিতে নিউজটি শেয়ার করুন
আরটিএনএন