চাঁদা দাবি ও মারধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রনির বিরুদ্ধে মামলা হয়।
মামলা করেন একটি কোচিং সেন্টারের পরিচালক রাশেদ মিয়া।
চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের নেতা নুরুল আজিম ওরফে রনিকে তিন দিনেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। পুলিশ খোঁজ না পেলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সক্রিয় আছেন ব্যবসায়ীকে চড়-থাপ্পড় মারা রনি। পুলিশ বলছে, বিষয়টির তদন্ত চলছে। অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতার কারণে এখনো বাসায় ফেরেননি ব্যবসায়ী রাশেদ মিয়া। তিনি বলেন, পুলিশ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিমের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও মারধরের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন রাশেদ মিয়া। তিনি চট্টগ্রামের জিইসি এলাকার ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন কোচিং সেন্টারের পরিচালক। তাঁকে মারধর করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান আজিম।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছয় মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রাগে ফুঁসতে থাকা ছাত্রলীগ নেতা আজিম কখনো রাশেদের চুল ধরে টানাহেঁচড়া করছেন, কখনো সমানে চড়-থাপ্পড় মারছেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কোচিং সেন্টারের পরিচালকের কার্যালয়েই নিষ্ঠুর ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি ধরা পড়ে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায়। ফুটেজে দেখা যায়, ছাত্রলীগ নেতা ১৩টি চড় মেরেছেন। একপর্যায়ে রাশেদের গলা টিপে ধরেন তিনি। ওই সময় হাত জোড় করে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেন রাশেদ।
গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে রাশেদ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি চাই রনিকে (নুরুল আজিম) গ্রেপ্তার করা হোক। কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরছে না। শুধু বলছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। মামলার তদন্তের বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) আমার সঙ্গে কথা বলেছেন।’ আবার হামলা হতে পারে এই ভয়ে পরিবার নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের বাসা ছেড়ে এক আত্মীয়ের বাসায় ওঠেন রাশেদ। এখনো সেখানেই রয়েছেন। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেন তিনি।
এর আগে গত ৩১ মার্চ চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহেদ খানকে তাঁর কার্যালয়ে চড় মারেন নুরুল আজিম। ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় তা ধরা পড়ে। এ ঘটনার ভিডিও ২ এপ্রিল ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তা ছাড়া ২০১৬ সালের ৭ মে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে একটি কেন্দ্রের পাশ থেকে অস্ত্র, গুলিসহ ছাত্রলীগের নেতা আজিমকে আটক করা হয়।
জাল ভোট দেওয়া এবং ভোটকেন্দ্রে অবৈধ প্রবেশের দায়ে তাঁকে মোট দুই বছরের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রায় দুই মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন তিনি।
পুলিশ খুঁজে না পেলেও ছাত্রলীগ নেতা আজিম ফেসবুকে বেশ সক্রিয়। মারধর ও চাঁদাবাজির ঘটনায় করা মামলার পর থেকে গতকাল বেলা পৌনে তিনটা পর্যন্ত ফেসবুকে ছয়টি পোস্ট (মন্তব্য) দিয়েছেন। একটি পোস্টে বলেছেন, তাঁকে ‘গনিমতের মাল’ বানানোর চেষ্টা চলছে।