বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজনীতি যখন করেন, তখন বিদেশে বসে দেশের রাজনীতির অঙ্গনে শব্দ বোমা ফাটাচ্ছেন কেন? আসুন, রাজপথ মোকাবেলা করুন।শুক্রবার রাজধানীতে আওয়ামী লীগের এক সেমিনার শেষে তারেক রহমানকে ফেরানোর বিষয়টি নিয়ে কাদেরের কাছে প্রশ্ন রাখেন সাংবাদিকরা।
জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বিষয়টি হচ্ছে তারেক রহমানের সাহস আছে কিনা, কত সাহস আছে। … রাজনীতি যখন করেন জেলে যাওয়ার সাহস নেই, সেই রাজনীতি কোন দিন সফলকাম হবে না। রাজনীতি করলে জেল জুলুম সহ্য করতে হবে।
তারেককে ফেরানোর চেষ্টা ও আগামী নির্বাচনের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এমন প্রশ্নও ছিল গণমাধ্যমকর্মীদের। জবাব আসে, নির্বাচনের আগে তারেক রহমানকে কে ফিরিয়ে আনবে? আমরা? বিদেশে পালিয়ে থাকা দণ্ডিত আসামিকে আইনগতভাবে ফিরিয়ে আনতে আদালতের নির্দেশ আছে। সেক্ষেত্রে কোন সমীকরণের বিষয় নেই।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার নিয়ে বিএনপির দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, তাদের (বিএনপি) নিজেরাই তো ঠিক নেই। কখনও বলে সহায়ক সরকার, কখনও বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আমরা কোনটা গ্রহণ করব?
পরিস্কার বলে দিচ্ছি, আর পাঁচ-ছয় মাস পরে নির্বাচনের তফসিল। নির্বাচনের আগে এখন আর সংবিধানের বাইরে যাওয়া কোন সুযোগ নেই।
যে কারনে খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি…বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য ভয়াবহ ইঙ্গিত বহন করে।
শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ মন্তব্য করেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে, এখানে কারো হাত নেই। ’ ওবায়দুল কাদের সাহেবের বক্তব্য আরো ভয়ংকর ইঙ্গিত বহন করে। ওবায়দুল কাদেরের ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যে আমরা দেশনেত্রীর জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আরো বেশি উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করছি। ওবায়দুল কাদের সাহেবের বক্তব্যে প্রমাণিত হলো যে সত্যি সত্যি তারা বিএনপি চেয়ারপারসনের জীবন নিয়ে একটা গভীর চক্রান্তে লিপ্ত।
রিজভী আরও বলেন, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা বারবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত করছে না। গতকাল শারীরিকভাবে অসুস্থ দেশনেত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র নিয়ে কারাফটকে গেলেও তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়নি কারা কর্তৃপক্ষ। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার হাঁটু ও পায়ের ব্যথা আরো বেড়ে গেছে।
পুরাতন ভবনের স্যাঁতসেঁতে কক্ষে তাঁকে অন্তহীন নানাবিধ সমস্যার দ্বারা আক্রান্ত হতে হচ্ছে। সেখানে একদিকে মশার তীব্র উপদ্রব, অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে তাঁকে এক অবর্ণনীয় কষ্টে রাখা হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, অবিলম্বে দেশনেত্রীর ইচ্ছানুযায়ী রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হোক, অন্যথায় জনগণের রুদ্ররোষ থেকে কেউই রেহাই পাবে না।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। এরপর গত ৭ এপ্রিল তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।গতকাল বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়াকে কারাগারে দেখতে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তিন নেতা। কিন্তু দেখা না পেয়ে তাঁরা ফিরে আসেন।
বার্তাবাজার