কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মুখে কোটা পদ্ধতি তুলে নেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রাগ করে বলেছেন, ঠিক আছে, আমরা কোটা পদ্ধতি তুলে নিলাম। প্রধানমন্ত্রী এটা করতে পারেন না। তার এখতিয়ার নেই। সংবিধানের বাইরে এই ঘোষণা। ছাত্ররা তা চায়নি। ছাত্ররা চেয়েছিল সংস্কার। তা না করে তিনি পুরোপুরি কোটা পদ্ধতি উঠিয়ে দিয়েছেন।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘উনি (প্রধানমন্ত্রী) জানেন যে, যেটা করছেন তা আদালতে গেলে চ্যালেঞ্জ হবে। যার ফলে এখন পর্যন্ত গেজেট হয়নি। যার ফলে এখন পর্যন্ত অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’তিনি বলেন, ‘অন্যদিকে যারা আন্দোলন করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা মামলা করা হয়েছে। তাদের চোখ বেঁধে গোয়েন্দারা তুলে নিয়ে গেছেন। আবার ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে তাদের ফেরত দিতে হয়েছে।’
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্রদের বা একটা শ্রেণির অধিকার আদায়ের যে বিচ্ছিন্ন আন্দোলন, এটা করে কিন্তু কোনো লাভ হবে না। যদি না গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করা হয়।’বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন ফখরুল।বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সভার আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব)।
সভায় ফখরুল বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় বিএনপি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তার মুক্তির জন্য জোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে মুক্ত করে আনতে হবে।তিনি বলেন, ‘আমরা দেশনেত্রীকে নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই একটি মানুষ (খালেদা জিয়া) যার দিকে তাকিয়ে মানুষ বেঁচে আছেন। আর কারও প্রতি আস্থা রাখতে পারে না দেশনেত্রী ছাড়া। সুতরাং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে মুক্ত করতে হবে।’
সব রাজনৈতিক দলের কাছে আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকবার বলেছি, আবারও বলছি, আসুন আমরা একটা প্রশ্নে অন্তত একমত হই। সেই প্রশ্নটা হচ্ছে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে চাই। এই বিষয়ে একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হওয়া প্রয়োজন।’
দলের নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে যাওয়ার তাগিদ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে সব অর্থনীতিবিদরা এবং সিপিডি বলছে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিকলাঙ্গ একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। প্রকৃত আয় বলতে কিছু নেই মানুষের। কর্মসংস্থান নেই। এই অবস্থা থেকে অবশ্যই আমাদের মুক্তি পেতে হবে। এই মুক্তির পথ একমাত্র জনগণ। জনগণের কাছে যেতে হবে।
তাদের জাগিয়ে তুলতে হবে। জনগণকে নিয়ে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এদেরকে পরাজিত করতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য শুধু নয়। বাংলাদেশের মানুষের সত্যিকার অর্থে মুক্তির জন্য। অন্যথায় এই ফ্যাসিস্ট সরকার দেশকে যেখানে নিয়ে গেছে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার কোনো পথ খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
সংগঠনটির সভাপতি প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আনহ আখতার হোসেইন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, সাংবাদিক নেতা সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী, এ্যাব নেতা আলমগীর হাছিন, রিয়াজুর রহমান রিজু, শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।
Jugantor