যুক্তরাজ্যে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটিতে পলাতক বিভিন্ন মামলায় সাজা প্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফেরতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা বৃটিশ সরকারের সঙ্গে কথা বলছি।
মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেলে লন্ডনে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও মানবিক ইস্যুতে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা বলেন তিনি।
আয়োজিক সংস্থাটির সদর দপ্তরে ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প: নীতি, অগ্রগতি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী রয়টার্স ও বাংলাদেশের সাংবাদিকসহ অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন, প্রশ্নোত্তর পর্বেও রোহিঙ্গা ইস্যূ ও যুক্তরাজ্যে পলাতক তারেক জিয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পায়।
সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুক্তরাজ্য একট্রি ফ্রি কান্ট্রি। যে কেউ এখানে আশ্রয় নিতে পারে, সেটা সত্য। কিন্তু ওই ব্যক্তি অপরাধ করেছে এবং ইতোমধ্যে তিনি দণ্ডিত।
যুক্তরাজ্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমি বুঝি না, কিভাবে যুক্তরাজ্য একজন দণ্ডিত ব্যক্তিকে আশ্রয় দিয়ে রাখছে। এটা যুক্তরাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করাই ভালো। অবশ্যই তিনি আদালতের দ্বারা অভিযুক্ত এবং আদালত রায় দিয়েছেন। অবশ্যই আমরা তাকে ফেরত চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, তার (তারেক রহমান) উচিত আদালতের মুখোমুখি হওয়া। আমরা বৃটিশ সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলছি। অবশ্যই একদিন আমরা তাকে ফেরত নেবো।বাংলানিউজ
…………………….
এমন বিশ্ব চাই যেখানে নারী পুরুষ হাতে হাত রেখে কাজ করবে: প্রধানমন্ত্রী………………………..
যথাযথ শিক্ষা ছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব নয়। আমরা এমন একটি বিশ্ব দেখতে চাই, যেখানে মানবিক উন্নয়ন অর্জনে নারী ও পুরুষ হাতে হাত রেখে কাজ করে যাবে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিনিস্টারে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সম্মেলন কেন্দ্রে ‘নারীর ক্ষমতায়ন; কমনওয়েলথ সদস্য দেশসমূহের মেয়েদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা’ শীর্ষক কমনওয়েলথ নারী ফোরামের এক অধিবেশনে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি জাতি হিসেবে পথ চলায় নারীদেরকে আমাদের সমান অংশীদার ভাবতে হবে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের সবোর্চ্চ ত্যাগ রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসাবে লিঙ্গ সমতা ও অবৈষম্যের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সংবিধানে নারীর অগ্রগতির জন্য রাষ্ট্রের কার্যকর ভূমিকা রাখারও বিধান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে নারী পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নারীর আত্মত্যাগের স্বীকৃতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নারীর লিঙ্গ সমতার জন্য বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে। লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে সফলতার ক্ষেত্রে ১৪৪ টি দেশের মধ্যে ওয়াল্ড ইকোনমিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৭ তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে ১৫৫ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম।
প্রধানমন্ত্রী নারী শিক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ গৃহীত কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে বলেন, নারী শিক্ষার প্রসারে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের লেখাপড়া বিনা বেতনে করা হয়েছে। ২৮ লাখ ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য মিড ডে মিল কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০১০ সালে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ কর্মসূচি বিনামূল্যে বই বিতরণ চালু করেছে এবং শিক্ষা বছরের প্রথম দিনে ৩ কোটি ৬০ লাখ ২০ হাজারের বেশি বই বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২ কোটি ৩০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তির আওতায় আনা হয়েছে। এদের বেশির ভাগই মেয়ে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য পৃথক ওয়াশ ব্লকের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের উল্লেখ করে বলেন, এই নীতিতে নারীর অংশ গ্রহণ ও ক্ষমতায়নে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় সংসদে নারীর সংরক্ষিত আসন ৩০ টি থেকে বাড়িয়ে ৫০ টি করা হয়েছে। বর্তমান সংসদের ২২ টির বেশি আসনে নারী এমপি সরাসরি নির্বাচিত হয়েছে। বাংলাদেশ পার্লামেন্ট, বিশ্বের একমাত্র পার্লামেন্ট, যেখানে স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা এবং সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা সকলেই নারী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় নারীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক রূপান্তর সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান, পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে গ্রামাঞ্চলে প্রায় ২ কোটি নারী কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতে নিয়োজিত রয়েছে।
monitorbd