বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য দেশের গণমাধ্যমে প্রচারে কোনো বাধা নেই। এতদিন হাইকোর্টের একটি রায়কে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে দেশের ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়াকে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে ভয় দেখানো হতো।কিন্ত কোটা সংস্কারে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পক্ষে দেয়া তারেক রহমানের বক্তব্য বর্তমানে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার করা হলেও এটাকে কেউ আদালত অবমাননা হিসেবে মনে করছেনা। আদালতও এ ব্যাপারে কিছু বলেনি। সুতরাং এটি স্পষ্ট, তারেক রহমানের বক্তব্য দেশের গণমাধ্যমে প্রচারে আইনগত কোনো বাধা নেই, বরং একমাত্র বাধা ব্যাংক ডাকাত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে আইনজীবী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তারেক রহমান একজন রাজনৈতিক নেতা এবং দেশ এবং জনগণের কল্যানে তারেক রহমান বক্তব্য দেবেন, বিভিন্ন ইস্যুতে নিজের এবং দলের অবস্থান জানান দেবেন এটাই রাজনীতির স্বাভাবিক নিয়ম। তবে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাতে ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে শেখ হাসিনা দলীয় বিচারপতিদের দিয়ে হাইকোর্ট থেকে একটি রায় বের করে আনেন। ওই রায়ে বলা হয়েছিল, তারেক রহমানের বক্তব্য ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করা যাবেনা।
ওই রায়কে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করলেও অনেক আইনজীবী মনে করেন, ওই রায়ের এখন কোনো কার্যকারিতা নেই। কারণ ওই রায়টি একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ভিত্তি করে দেয়া হয়েছিল। তারেক রহমানের সকল বক্তব্যের ওপর নয়। এ ব্যাপারে ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম বলেন, একটি বৈধ ও জনসমর্থিত রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতার বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশের ওপর আদালত নিষেধাজ্ঞা দেয়ার নজির বিশ্বের ইতিহাসে কোথাও নেই।কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় এ ধরণের রায় অগ্রহণযোগ্য। সেদিক থেকে গণমাধ্যম তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার করে ভুল করছেনা বলেই আমার মনে হয়।
উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসে’র প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মামুন আহমদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ফোনে কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তারেক রহমানের এই ফোনালাপ শেখ হাসিনার নির্দেশে রেকর্ড করে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়। তারেক রহমানের বক্তব্যকে শেখ হাসিনা ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে চাইলেও এটি বরং হিতে বিপরীত হয়েছে। কারণ তারেক রহমানের এই বক্তব্য নতুন নয় তিনি এর আগেও লন্ডনে দলীয় সভায় দেয়া এক বক্তৃতায় সরাসরি বলেছিলেন, বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রশাসনে মেধাবীদের সুযোগ করে দিতে সরকারি চাকুরীতে বর্তমান কোটা পদ্ধতি পাঁচ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক বলেছেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে গিয়ে যেভাবে আইন আদালতকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে এতে আপাতত শেখ হাসিনাকে লাভবান মনে করা হলেও শেষ পর্যন্ত লাভবান হবেন তারেক রহমান।তিনি বলেন, শেখ মুজিবকেও পাকিস্তানিরা ষড়যন্ত্র আর মামলা দিয়ে মোকাবেলা করতে চেয়েছিলো তবে তারা বার্থ হয়েছে। তারেক রহমানকে মোকাবেলা করতে চাইলে শেখ হাসিনার উচিত ষড়যন্ত্র কিংবা আদালতকে ব্যবহার না করে রাজনৈতিক উপায় বেছে নেয়া।
আদালতের রায়ের অজুহাত দিয়ে কখনো তারেক রহমানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার করা আবার কখনো প্রচার বন্ধ করে দেয়া এই বিষয়ে ব্যাংক ডাকাত সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিতকে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, দেশের গনমাধ্যম ইজ টোট্যালি বোগাস এন্ড্ রাবিশ। এরা কখন কি লেখে আর কি করে বোঝা মুসকিল। “আই মাস্ট স্যে, সামটাইমস আই ফাউন্ড দ্যেম দ্যাট দ্যে আর ভেরী ম্যাচ আওয়ামী লীগার দ্যান মী ইভেন্ দ্যান হাসিনা। দ্যে বিহ্যাভ লাইক অর্গানাইজড গ্যাং”
dailybdtimes