প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশের চলমান উন্নয়নের ধারা আর কেউ অব্যাহত রাখতে পারবে না। এজন্য আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিতে হবে। বৃহস্পতিবার রাতে দশম জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করে, আওয়ামী লীগ যদি সরকার গঠন করে দেশসেবার সুযোগ পায়, তাহলে আমাদের অর্জনগুলো ধরে রাখতেই পারব। উপরন্তু উন্নত দেশের পর্যায়ে এগিয়ে যাবার পথকে সুগম করতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতাকে আর কেউ ব্যর্থ করতে পারবে না।’সংসদ নেতা বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য আমাদের পরিকল্পিতভাবে অনেক কাজ করতে হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য যে শর্ত তার তিনটিই আমরা সঠিকভাবে পূরণ করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে এবং আগামী ৬ বছরেও যে পরিমাণ শর্ত পূরণের প্রয়োজন হবে তাও করে রেখেছে।’নৌকা মার্কায় জনগণ ভোট দিলে উন্নত দেশে যাওয়ায় আমাদের পথ সুগম হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অন্য কেউ যদি ক্ষমতায় আসে এবং তারা যদি আমাদের উন্নয়নের ধারাটি ধ্বংস করতে না চায় তাহলেও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।’
এরপরেই প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত সরকারের ২০০১ পরবর্তী সময়ে দেশের শাসন ক্ষমতায় আসার পর খাদ্য উৎপাদন, বিদ্যুৎ ও কৃষিখাতে দেশের পিছিয়ে পড়ার অতীত ইতিহাস স্মরণ করে আশংকা বোধ করেন এবং সন্দেহ প্রকাশ করেন।তিনি বলেন, ‘সন্দেহ প্রকাশ করছি এই কারণে যে, ’৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যে উন্নয়ন কাজগুলো আমরা করেছিলাম, তা পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত অব্যাহত রাখেনি বরং সেগুলোকে ধ্বংস করে দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী উদাহরণ দেন, ’৯৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার সময় তার সরকারর ২৬ হাজার টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রাখলেও ২০০৯ সালে তিনি যখন আবার সরকার গঠন করেন, তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৩২ হাজার মেট্রিক টন।বিদ্যুৎ খাতের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপির কাছ থেকে ১৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়ে তার সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনকে ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াটে নিয়ে গিয়েছিল। অথচ বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে। স্বাক্ষরতার হার ৬৫ দশমিক ৫ ভাগ থেকে ৪৪ ভাগে নামিয়ে আনাসহ শিক্ষাখাতেরও অনুরূপ অধঃপতন হয় বিএনপি সরকার আমলে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন সংসদে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের উন্নয়ননীতি বিষয়ক কমিটি (সিডিপি) কর্তৃক বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের অভিযাত্রায় যুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের জনগণকে জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
শেখ হাসিনা এই ধন্যবাদ জনগণের প্রাপ্য উল্লেখ করে বলেন, তারা ভোট দিয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পেরেছিল, সরকারের ধারাবাহিকতা ছিল বলেই দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের অভিযাত্রায় যুক্ত হতে পেরেছে।তিনি বলেন, ‘আমার ধন্যবাদের প্রয়োজন নেই। মনে করি এটা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। বরং আমরা ধন্যবাদ জানাই জনগণকে। তারা আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে বলেই উন্নয়ন করতে পেরেছি। তাই এ ধন্যবাদটা বাংলাদেশের জনগণকে উৎসর্গ করছি এবং তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
reportbd24