জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন ৫০১ চিকিৎসক।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতির মাধ্যমে তারা এ দাবি জানান।
এতে বলা হয়, গত ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের স্লোগান ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সবার জন্য সর্বত্র’ হওয়া সত্ত্বেও ওইদিন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) যে প্রহসন হয়েছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
চিকিৎসকদের অভিযোগ, খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে হাসপাতালে এনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে শুধুমাত্র এক্স-রে করা হয়েছে। কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বোর্ড বা উনার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি।
তারা বলেন, খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন আর্থাইটিসে ভুগছেন। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিক, শ্বাসকষ্ট ও চোখে সমস্যা রয়েছে। জরাজীর্ণ নির্জন কারাগারে একাকী থাকায় তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। কিন্তু, সরকার গা-ছাড়াভাবে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা দিচ্ছে। এতে ৭৩ বছর বয়সী রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে তার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে চিকিৎসা করানোর দাবি জানান।
একই সঙ্গে অবহেলাজনিত কারণে তার কোনো ধরনের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে এর দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে বলে হুমকি দেন তারা।
৫০১ জন বিশিষ্ট চিকিৎসকের পক্ষে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি এবং খালেদা জিয়া মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এ কে এম আজিজুল হক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
আরটিভি
‘খালেদা জিয়াকে নিয়েই খেলে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আবারও বললেন, খালি মাঠে গোল দিতে চায় না বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বিএনপিকে সাথে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে খেলেই গোল দিবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য আরো বলেন, দুর্নীতির মামলায় আদালতের রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জেলে গেছেন। আমরা চাই, তিনি আইনি প্রক্রিয়ায় বের হয়ে আসুন। তাকে নিয়েই আমরা খেলে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় মোহাম্মদ নাসিম এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাসিম আরো বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কবর রচনা হয়ে গেছে। সেটি আর ফিরে আসবে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশ-বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র না করে, নির্বাচনে জয়ী হতে চেষ্টা করুন।
এ সময় কোটা পদ্ধতি বাতিল প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন দেখলেন আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, কচি কচি বাচ্চারা রাস্তায় নেমে এসেছে, তখন তিনি কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। মমতাময়ী মায়ের মতো তিনি বলেছেন, ‘আমার বাচ্চারা কেন রাস্তায় থাকবে?’ মেয়েরা সারারাত হলের বাইরে থাকায় তিনি চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারেননি।
আর অপরদিকে তারেক জিয়া লন্ডনে বসে শিক্ষার্থীদের উসকানিতে ব্যস্ত ছিলেন। বলেছেন, তোমরা ওদের সাথে মিশে যাও। কিছু একটা করো। এই হলো আওয়ামী লীগ-আর বিএনপির রাজনীতির পার্থক্য।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। রাজাকারমুক্ত দেশ, না রাজাকারের হাতে দেশ যাবে-সেই সিদ্ধান্ত আপনাদের নিতে হবে। ৭০ নির্বাচনে দেশবাসী যদি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত না করত, তাহলে দেশ স্বাধীন হতো না। এবারের নির্বাচনও সেই ৭০ নির্বাচনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। ধারাবাহিক উন্নয়ন, শান্তি আর সমৃদ্ধির আলোকিত বাংলাদেশ চান, নাকি সারা দেশে বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা আর জ্বালাও-পোড়াওয়ের ধ্বংসাত্মক বাংলাদেশ চান। সিদ্ধান্ত আপনাদের, এ দেশের জনগণের।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ২০ শয্যার ‘জিল্লুর রহমান বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ট্রমা সেন্টারের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
শহরের কমলপুর ট্রমা হাসপাতাল মাঠে আয়োজিত ওই জনসভায় এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার প্রয়াত পিতা, বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের কাছে আপনাদের যে ১০টি দাবি ছিল, এই ট্রমা সেন্টারের দাবিটি ছিল ৯ নম্বর। একে একে আপনাদের সব দাবি পূরণ করা হচ্ছে। আশা করি একদিন আপনাদের ১০ নম্বর অর্থাৎ সর্বশেষ দাবিটিও পূরণ হবে ইনশা আল্লাহ।এ সময় নাজমুল হাসান পাপন ভৈরব উপজেলার ইউনিয়নবাসীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে আগানগর, শ্রীনগর, সাদেকপুর ও শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে একটি হাসপাতাল স্থাপনের দাবি জানান।
ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই জনসভায় আরো বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম বাকী বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ, পৌরসভার মেয়র ও মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আফজাল হোসেন, সভাপতি মো. শাহজাহান, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মুহি প্রমুখ।
monitorbd