আজ আমার পরম শ্রদ্ধেয় আব্বা আল্লামা সাঈদীর সাথে কারাগারে দেখা করলাম।মাথায় কারুকার্যময় সেই টুপি,মোটা ফ্রেমের কালো চশমা,হাতে সোনালী রঙের ঘড়ি, হাল্কা নীলাভ পান্জাবী আর তার উপরে কালো রঙের কোটতে আব্বাকে বেশ সুন্দর লাগছিল আজ, আলহামদুলিল্লাহ।কিন্তু আমাদের সাক্ষাতের সময় যে বড় অল্প আব্বার মায়াভরা পবিএ চেহারাখানি নয়ন ভরে দেখতে দেখতেই তো সময় ফুরিয়ে যায়।নতুন করে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপর বিশেষ করে শিশুসহ মহিলা জামায়াত নেতা কর্মীদের গ্রেফতার ও রিমান্ডের নামে নির্যাতন খবরে আব্বা খুব ব্যথিত।
সাথে সাথে আব্বা এটাও বললেন যে, ইসলামী আন্দোলনকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্যই মূলত এই দমন নিপীড়ন চলছে।তবে হাজারো জুলুম নির্যাতন চালিয়ে ইসলামী আন্দোলনকেকে স্বব্ধ করা যায়নি আর যাবে ও না,ইনশা-আল্লাহ।আব্বা আরো বলেন, ইসলামী আন্দোলন আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া নেয়ামত। এ আন্দোলন শামিল হতে না পারলে আমরাই হারিয়ে যেতাম।কেউ কেউ বলে থাকেন,আমি জামায়াত যোগ না দিলে হয়তো জেল জরিমানার মুখোমুখি হতে হতো না।আল্লাহর কসম। দীর্ঘ প্রায় ৮বছর ধরে জেলে থাকার পরও আমার মনে একবারও এ ধরনের কোন কথা জাগ্রত হয়নি।বরং আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি ইসলামী আন্দোলন আল্লাহর পাকের বিশেষ এক নেয়ামত।
আল্লাহ পাকের দরায় আমি এই নেয়ামত লাভে ধন্য হয়েছি।সুতরাং ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীদের জন্য হতাশার কিছু নেই।বরং দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে মনযিল পানে।আমার আব্বার বয়স এখন ৭৮।তিনি গত ৩৭ বছরের ডায়াবেটিক পেশেন্ট।তাঁর হার্টে ৫টি রিং বসানো আছে।এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ অ্যর্থাটিস রোগেও আক্রান্ত। বিগত দিনগুলোতে কারাগারে কতৃর্পক্ষ তাঁর হাটু কিংবা কোমড়ে সামান্য থেরপির ব্যবস্হাও করেনি।যে কারণে আমার আব্বা আল্লামা সাঈদী একনাগাড়ে বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না এমনকি তিনি দাঁড়িয়েও নামাজ আদায় করতে পারছেন না।হাঁটু ও কোমড়ের তীব্র ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন আব্বা।কিন্তু আব্বাকে ডাক্তার দেখানো বা চিকিৎসা কোনটাই করাতে পারছিনা।আমরা বহু চেষ্টা করার পরও আব্বাকে হাসপাতালে নেয়া বা ডাক্তার দেখানোর কোন অনুমতি আমাদেরকে দিচ্ছেনা কারা কর্তৃপক্ষ।
আব্বার শারিরীক সুস্হতার জন্য তিনি অপনাদের সকলের কাছে বিশেষ দোয়া চেয়েছেন।
আমাকে যারা আব্বার কাছে আপনাদের সালাম পৌঁছাতে বলেছিলেন আমি আপনাদের প্রত্যেকের সালাম আব্বার কাছে পৌঁছে দিয়েছি।বিশেষ করে হাফেজ আব্দুস সালাম,ডঃ প্রফেসর ইউছুফ,ডাক্তার শহীন,মানসুর,শাহাদাত,মুস্তাফিজুর রহমান,ইদ্রীস আলী,লিটন ভাইএর কথা আলাদাভাবে বলেছি।কোন কোন ভাই তার নিজের জন্য এবং সন্তান ও পরিবারের জন্য দোয়া চেয়েছেন,তাদের কথাও বলেছি।আব্বা আপনাদেরকেও সালাম জানিয়েছেন এবং দোয়া চেয়েছেন।সাক্ষাতের সময় শেষ বলে কারারক্ষী এসে জানালো আমাদের। কতোদিন পর দেখা,কতো কথা বলবো ভেবেছিলাম।বুকের ভেতর জমানো ও ছিল অনেক কথা কিন্তু বলা হলো না।বুকে চাপা দিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে এলাম।
শামীম সাঈদী
কপি পোষ্ট।